• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষকের বিরুদ্ধে পদোন্নতির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ

প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৩, ০৫:১২ পিএম

শিক্ষকের বিরুদ্ধে পদোন্নতির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নগদ চার লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

সাতক্ষীরা শ্যামনগরের ১২২নং গাবুরা খোলপেটুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন। তিনি হোসেন শ্যামনগর উপজেলার বড়কুপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ১৮৫নং সোয়ালিয়া সাপেরদুনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। 

এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের নেওয়া অর্থ ফেরত চেয়ে জেলা শিক্ষা অফিস, উপজেলা শিক্ষা অফিস ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী শিক্ষকের স্ত্রী ফৌজিয়া পারভিন। 

ভুক্তভোগী শিক্ষক ইসমাঈল হোসেনের স্ত্রী ফৌজিয়া পারভিন জানান, তার স্বামী দীর্ঘদিন যাবত ১৮৫নং সোয়ালিয়া সাপেরদুনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও একই সঙ্গে ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। একই এলাকার পার্শ্ববর্তী ১২২নং গাবুরা খোলপেটুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন তার স্বামীকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। বিনিময়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। তার স্বামীর অর্থনৈতিক অবস্থা বেশি ভালো না হওয়ায় প্রথমে পাঁচ লাখ টাকা প্রদানে অসঙ্গতি জানায়। পরে তার গহনা ও কিছু সম্পত্তি বিক্রি করে চার লাখ টাকা দেন দেলোয়ারকে। টাকা লেনদেনের সময় তিনজন সাক্ষী ছিল। এরপর বেশ কয়েক মাস নানা ধরনের টালবাহানা দেখিয়ে সময়ক্ষেপণ করেন দেলোয়ার। দেলোয়ারের কাছে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করে নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দিলেও সেটার কোনো বাস্তবিক ফল আজ পর্যন্ত পাইনি। পরবর্তী সময়ে তার স্বামী বুঝতে পারেন যে, তাকে ফাঁদে ফেলে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন শিক্ষক দেলোয়ার। এই দুশ্চিন্তায় তিনি স্ট্রোক করেন। দীর্ঘদিন যাবত তিনি অসুস্থ। অসুস্থ থাকার কারণে তার স্বামীর বেতন বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেই বেতন চালু করার জন্য পুনরায় ১৫ হাজার টাকা নেয় দেলোয়ার হোসেন। সমুদয় টাকা ফেরত পাওয়ার মর্মে, সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ফৌজিয়া পারভিন। 

রোববার (৫ মার্চ) শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগপত্র জমা দেন তিনি। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক দেলোয়ার হোসেনের মুঠোফোনের নম্বরে কল করা হলে কেউ একজন ফোন রিসিভ করে জানান, তিনি দেলোয়ার না। এরপর থেকে নম্বরটিতে সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না।

সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমিন করিমী ঢাকা পোস্টকে জানান, উল্লেখিত বিষয়ের ওপর একটি অভিযোগ পেয়েছি। খুব দ্রুত অভিযুক্ত শিক্ষকের কাছে চিঠি যাবে। তাকে শুনানিতে ডেকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে টাকার বিনিময়ে যারা মৎস্য পেশার সঙ্গে জড়িত না তাদেরকে জেলে কার্ড করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময় সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে।

আর্কাইভ