
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ০৩:৪৬ পিএম
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বাংলাদেশ থেকে দুবাই ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে অর্থপাচারে এজেন্ট হিসেবে কাজ করা আরামিট গ্রুপের এজিএম উৎপল পাল এবং জাবেদের দেশের সম্পদ দেখভাল করা কর্মকর্তা আবদুল আজিজকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকা থেকে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে উপস্থাপন করে তাদের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। দুদক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, গ্রেফতার হওয়া ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. আব্দুল আজিজ দুদকের এজাহারভুক্ত আসামি। আর আরামিট পিএলসির এজিএম উৎপল পাল নতুন করে মামলায় অন্তুর্ভুক্ত হতে যাচ্ছেন।
দুদক সূত্রে আরও জানা যায়, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিদেশের সম্পদ অর্জন ও দেখাশোনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী উৎপল পাল। তিনি সাইফুজ্জামানের দেশ থেকে দুবাই ও দুবাই থেকে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে অর্থপাচার প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অর্থাৎ উৎপল পালকে মাস্টারমাইন্ড হিসাবে দেখছে দুদক টিম। যদিও তিনি আরামিট পিএলসির কর্মচারী, কিন্তু তার (সাইফুজ্জামান চৌধুরী) ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (বিদেশে সম্পদ তৈরি, দেখাশোনার কাজ) হিসেবে কাজ করেছেন। তার কাছ থেকে জব্দ করা ২টি ল্যাপটপ ও ২টি মোবাইল ফোন থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। যা ফরেনসিক করার জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। অন্যদিকে আব্দুল আজিজ জাবেদের সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণকারী হিসেবে কাজ করেন।
কর্মচারীকে মালিক সাজিয়ে নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) ঢাকার কারওয়ান বাজার শাখা থেকে ২১ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী ও ব্যাংকটির এমডিসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ১৬ সেপ্টেম্বর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপ-সহকারী পরিচালক মো. রুবেল হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।
এছাড়া প্রায় ১২৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার স্ত্রী ও ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমীলা জামানসহ অর্ধশত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত চলমান রয়েছে।
জানা গেছে, সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রী রুকমীলার নামে যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৯টিসহ অন্যান্য দেশেও বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/জমিসহ অন্যান্য স্থাবর সম্পদ ক্রোক ও ফ্রিজ করার আদেশ দিয়েছেন বাংলাদেশের কয়েকটি আদালত। এছাড়া গত ৫ মার্চ অপর এক আদেশে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের নামে থাকা ৩৯টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের (অবরুদ্ধ) আদেশ দেন আদালত। এসব ব্যাংক হিসাবে তাদের ৫ কোটি ২৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা জমা রয়েছে।
দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার পরিবার ও স্বার্থ-সংশ্লিষ্টদের ২৬টি বিও অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। শেয়ার হিসেবে এসব অ্যাকাউন্টে ৫৭৬ কোটি ৮ লাখ ৭৭ হাজার ৭৩০ টাকা রয়েছে।