
প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৫, ১০:৩৬ এএম
গাজা সিটিজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনী ঘোষণা দিয়েছে— এটাই পালানোর শেষ সুযোগ। আর তাই দিনের পর দিন আগ্রাসন সহ্য করার পর, অবশেষে শহর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন সেখানে থেকে যাওয়া বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল থেকেই নেমেছে শহর ছেড়ে চলে যাওয়া মানুষের ঢল। পায়ে হেঁটেই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন তারা। কারণ, সামনে যেসব ভবন পাচ্ছে, সেগুলোই গুড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী’র (আইডিএফ) সেনারা।
মূলত, প্রায় দুই বছর ধরে হামলার শিকার হয়েও গাজা উপত্যকার উত্তরের গাজা সিটিতে মাটি আঁকড়ে পড়ে ছিলেন অনেক ফিলিস্তিনি। বহুদিন মৃত্যুভয় উপেক্ষা করেই থেকে গিয়েছিলেন প্রিয় জন্মভূমিতে। তবে বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই বদলে যেতে থাকে শহরের চিত্র।
বাধ্য হয়ে অনেকেই এতদিন তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তবে গাজা শহরের আশ্রয় শিবিরগুলোও এখন মৃত্যুপুরী। তাই এই শহর ছেড়ে যাওয়াই ভালো সিদ্ধান্ত— তাদের কাছেও বিষয়টা এখন যেন ঠিক এমন।
শহরের এক বাসিন্দা বলেন,গাজা শহরের অবস্থা এখন ভীষণ খারাপ। আমরা স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলাম। আজ ড্রোনগুলো স্কুল আঙিনার ওপর উড়ছিল, আমাদের সতর্ক করছিল যে আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে আছি।
আরেকজন বলেন, আমরা পায়ে হেঁটেই এসেছি। কোনো যানবাহন পাইনি, আর যাতায়াতের খরচ দেয়ার মতো টাকাও নেই, তাই হেঁটেই চলেছি। জানি না কোথায় যাচ্ছি। মৃত্যুর হাত থেকে পালাচ্ছি আমরা। কারণ সেখানে প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ হচ্ছিল।
এদিকে, শহরটির বাজারে নেই পর্যাপ্ত খাবারের মজুদ। জিনিসপত্রের দামও আকাশছোঁয়া। সবমিলিয়ে গাজা সিটিতে বাস করার আর কোনো উপায়ই রাখেনি জায়নবাদীরা।
গেল আগস্টের শেষ দিকে দ্বিতীয় ধাপে ‘অপারেশন গিডিয়নস চ্যারিয়ট’ হাতে নেয় নেতানিয়াহু বাহিনী। যার লক্ষ্যই হলো হামাসের কাছ থেকে গাজা সিটির সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়া। এ অভিযান শুরুর পরে থেকেই শহরটিতে বেড়েছে আগ্রাসনের মাত্রা।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী এখনও গাজা শহরে রয়ে গেছে ৬ থেকে ৭ লাখ মানুষ। কয়েক সপ্তাহে শহর ছেড়ে পালিয়েছে প্রায় ৪ লাখ ফিলিস্তিনি।