• ঢাকা শনিবার
    ১১ মে, ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

মিতুকে হত্যার পর তিনটি বিয়ে করেছেন বাবুল আক্তার

প্রকাশিত: মে ২২, ২০২১, ১০:৩৯ পিএম

মিতুকে হত্যার পর তিনটি বিয়ে করেছেন বাবুল আক্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পুলিশের নাম করা সদস্য, যিনি ছিলেন একজন অকুতোভয় অফিসার। তিনি বহু মামলা নিমিষেই সুরাহা করেছেন। দুর্দান্ত প্রতাপে পুলিশ বাহিনীতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। একের পর এক পদোন্নতি পান এসপি বাবুল আক্তার। সন্ত্রাসী জঙ্গিবিরোধী অভিযান ছিল চোখে পড়ার মতো। এই বাবুল আক্তারই এখন আসামি। স্ত্রীকে হত্যার দায়ে তাকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।

পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের চারিত্রিক স্খলনের বিষয়টি অজানা ছিল না মাহমুদা খানম মিতুর। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, চারবার আত্মহত্যা করার চেষ্টাও করেছিলেন তিনি। তবে দুই সন্তানের কথা চিন্তা করে তিনি আত্মহত্যার পথ থেকে সরে আসেন। এসব তথ্য দিয়েছেন মাহমুদা মিতুর পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। তাকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। পিবিআই প্রধান বলছেন, তাদের হাতে মিতু হত্যার সঙ্গে বাবুল আক্তারের জড়িত থাকার বিষয়টির অকাট্য প্রমাণ আছে বলেই গ্রেফতার করা হয়েছে।

মাহমুদা খানম মিতুর মা শাহিদা মোশাররফ বলেন, গায়েত্রীর সঙ্গে এসপি বাবুল পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছেন বলে মিতু তাকে জানান। বাবুল আক্তার তাকে বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। তাকে আর ভালো লাগছে না বলেও জানান বাবুল আক্তার। বাবুল আক্তারের পরিবারের সদস্যদের বলেও এর কোনো বিহিত পাননি বলে মিতু তার মাকে জানান।

মিতুর মা আরো বলেন, মিতুকে হত্যার পর তিনটি বিয়ে করেছেন বাবুল আক্তার। একটি চট্টগ্রামে, একটি খুলনায় একটি কুমিল্লায়। প্রথমটি চট্টগ্রামের মেয়ে সামাইয়া। বাবুল তাকে তালাক দিয়েছেন। দ্বিতীয়টি খুলনায়। পরিবারের ইচ্ছায় সেই বিয়ে করেন বাবুল আক্তার। তবে তার সঙ্গেও বেশি দিন সংসার করা হয়নি। তাকেও তালাক দেন বাবুল আক্তার। এখন তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন বাবুল আক্তার। এই মেয়েটি কুমিল্লার। মিতুর মৃত্যুর পর পত্রিকায় খবর আসে, এক ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রীর সঙ্গে প্রেম চলছিল বাবুল আক্তারের। সেই ইঞ্জিনিয়ারের সাবেক স্ত্রীকে বিয়ে করেছেন বাবুল আক্তার।

মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বলেন, কক্সবাজারে এসপি হিসেবে জয়েন করার পর গায়েত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বাবুল। ২০১৩ সাল থেকে মিতুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। এতে গায়েত্রীর সম্পর্ক থাকতে পারে। তার সঙ্গে প্রেম করার পর থেকেই বাবুল আমার মেয়ে মিতুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ২০১১ সাল থেকে বাবুলের পরিবার মিতুকে অত্যাচার করত বলেও অভিযোগ করেন তিনি। দুই নাতি-নাতনীকে দূরে সরিয়ে রাখায় কষ্টে আছেন তারা। ২০১৭ সাল থেকে শিশুদের সঙ্গে দেখা করতে দেন না বাবুল। ফোন দিলেও কখনো ঠিকমতো কথা বলতে দিতেন না তিনি।

তার বাবা আরও বলেন, এসব করতে বাবুলের পরিবারও তাকে সাহায্য করত। কখনো তারা বাবুলকে বাধা দেয়নি। উল্টো তারা মিতুকে অত্যাচার করত।

মিতু হত্যা মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন, আমরা কাজ করছি। বাবুল আক্তারের কাছ থেকে জবানবন্দি নিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে আমাদের হাতে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ আছে। আর পিবিআই যথাযথ প্রমাণ না পেলে কাউকে গ্রেফতার করে না।

লাইজুল/এম. জামান

আর্কাইভ