 
              প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২৩, ০২:০৪ এএম
-20231204140440.jpg) 
                 ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আসার মতো কোনো পরিস্থিতি নেই। আমাদের অংশীজনদের বলেছি, আমরা অনেক জায়গায় সংস্কার নিয়ে এসেছি তাদের চাওয়া মতো। শ্রম আইনের সংশোধন ও বেজা আইনের মাধ্যমে শ্রম অধিকারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রকে এই অগ্রগতির চিত্র জানানো হবে।
সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে শ্রমসংক্রান্ত জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনায় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে এ কথা বলেন বাণিজ্য সচিব (সিনিয়র) তপন কান্তি ঘোষ।
তিনি আরও বলেন, আমাদের যারা বাণিজ্য অংশীদার, বড় অংশীদার- ইউরোপীয় ইউনিয়নে ২৫ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি করি, সেটা শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১০ বিলিয়ন রপ্তানি করি, সেখানে আমরা কোনো শুল্কমুক্ত সুবিধা পাই না। পৃথিবীর মধ্যে বলা যায় যে, অনেক বেশি শুল্ক দিয়ে বাংলাদেশকে রপ্তানি করতে হয়। তবে নতুন শ্রমনীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী শ্রম পরিবেশের আরও উন্নতি হোক। বাংলাদেশ এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
তপন কান্তি ঘোষ বলেন, কারো দয়ায় নয়, পণ্যের গুণগত মান, আন্তর্জাতিক চাহিদা ও শ্রমিক অধিকার রক্ষা করেই তৈরি পোশাক রপ্তানি করছে বাংলাদেশ।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দ্বিবার্ষিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের শ্রম আইনে শ্রম অধিকারের যেসব বিষয় আছে, তার মধ্যে বেশ কিছু পরিপালন করা হয়েছে। তবে তারা চায় আরও অগ্রগতি হোক।
বাণিজ্য সচিব বলেন, তৈরি পোশাক খাতে নতুন ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা হয়েছে; জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। এছাড়া শ্রমিক কল্যাণে আরও কী করা যায়, সে লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।
তিনি বলেন, ইইউ, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু দেশের কিছু শর্ত ছিল। শ্রম আইন ও বেজা আইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে চাওয়া ছিল, তা অনেকটাই পূরণ করা হয়েছে। গত কয়েক বছরে তিনবার শ্রম আইন সংশোধন করা হয়েছে। তাদের কিছু দাবি আছে যে, আমাদের শ্রম আইনে একটা মিনিমাম থ্রেশোল্ড আছে, যেটা ২০ ভাগ ছিল। একটি কারখানার ২০ শতাংশ শ্রমিক যদি সংগঠন করতে চায়, তারা করতে পারবে। তার নিচে হলে পারবে না। তাদের দাবি ছিল ১০ শতাংশ করতে হবে। এটাকে আমরা ১৫ শতাংশ করেছি। আরেকটা দাবি হচ্ছে, বেপজা আইনে এখানে সংগঠন করার অধিকার আছে। ফ্রিডম অব এক্সপ্রেসের সুযোগ আছে কিন্তু আমরা ট্রেড ইউনিয়ন বলি না। আইনে বলা আছে, ওয়ার্কার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন; জিনিসটা প্রায় একই। এখনো সংগঠন হচ্ছে, তখনো সংগঠন হবে। নামটা যেন ট্রেড ইউনিয়ন হয়। এটা নিয়ে আমাদের রোডম্যাপে পরিকল্পনা আছে। ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে বেপজা লেবার অ্যাক্ট সংশোধন করা হবে। সংশোধন করে কিভাবে হবে সেটা সব অংশীজন আলোচনা করে ঠিক করা হবে।
আপনারা মনে করছেন কিনা যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে এবং এটা নিয়ে আপনারা বা ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন কিনা- জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব বলেন, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি কিন্তু নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মেমোরেন্ডামে চাচ্ছে শ্রম পরিস্থিতির আরও উন্নতি হোক সব দেশে, এটা কিন্তু শুধু বাংলাদেশকে টার্গেট করে না। সেটা আমরা আমলে নিয়েছি।
ব্যাপারটি চলমান আলোচনার অংশ জানিয়ে তিনি বলেন, থ্রি-প্লাস ফাইভ অর্থাৎ পাঁচজন রাষ্ট্রদূত ও তিনজন সচিব মিলে যে একটা প্ল্যাটফর্ম আছে, সেই বৈঠকটা এ মাসে করার কথা। সে জন্যই মূলত আজকে বসেছিলাম যে, আমাদের এতকাল যে অগ্রগতি হলো, সেটা কিভাবে জানানো যায়। তার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মেমোরেন্ডাম আলোচনা হয়েছে। সেটা আমাদের অংশীজনদের বলেছি, আমরা অনেক জায়গা সংস্কার নিয়ে এসেছি তাদের চাওয়া মতো। আরও কী করা যায় আগামী দিনে। ২০২১ থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত এ পাঁচ বছর আমাদের জাতীয় কর্মপরিকল্পনার মেয়াদ। সেক্ষেত্রে কিছু বাস্তবায়িত হয়েছে কিছু বাস্তবায়ন হয়নি, হবে আগামী দুই বছরে।
সংশোধনী কিভাবে সুপারিশ করা হবে জানতে চাইলে তপন বলেন, অংশীজন; এখানে বিদেশি বিনিয়োগকারী আছে, শ্রমিক কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধি আছে, সরকার আছে, সবাই মিলেই সিদ্ধান্ত নেবে কোনো ফরম্যাটে যাবে। ইতোমধ্যে বেপজা (বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ) আইনে অনেক সংস্কার আনা হয়েছে। এটার ব্যাপারেও সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেবেন।
তিনি বলেন, আমাদের রপ্তানি বাজার যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য যা যা করণীয় তা করব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়ে। আমাদের অর্থনীতির সক্ষমতা, রপ্তানি পরিস্থিতি সবকিছু দেখে এবং আন্তর্জাতিক যে রিকোয়ারমেন্ট আমাদের মানতে হবে, সেটা মেনেই করব।
সভায় পররাষ্ট্র, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/
 
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
      