• ঢাকা সোমবার
    ২০ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

‘আসুন সময়ক্ষেপণ না করে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলি’

প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২১, ০৬:৫৯ পিএম

‘আসুন সময়ক্ষেপণ না করে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলি’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ৯০' এর গণঅভ্যুত্থান দেশের রাষ্ট্রব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে দিয়েছিল। আরেকটি গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে হবে। তাই আসুন সময়ক্ষেপণ না করে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলি।

রোববার (১০ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতৃবৃন্দ ও জেহাদ স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে শহীদ জেহাদ দিবসউপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সরকার পতনে ৯০-এর মতো আরেকটি গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর সময় আসন্ন দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৯৭১ সালে লাখো মানুষের জীবনের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। ৯০' সালের একটি গণঅভ্যুত্থান দেশের রাষ্ট্রব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে দিয়েছিল। গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। সেসময় ছাত্র-জনতা স্বৈরশাসকের তখতে-তাউস উল্টে দিয়েছিল। সেই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। আজ সেই সময় এসেছে। আরও দৃঢ়তার সঙ্গে আরেকটি গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে হবে। তাই আসুন সময়ক্ষেপণ না করে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলি।

১৯৯০ সালের ১০ অক্টোবর স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনে ঢাকার পল্টনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ছাত্রদল কর্মী নাজিরউদ্দিন জেহাদ। এরপর থেকে এ দিবসটিকে জেহাদ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে বিএনপি। জেহাদ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার নবগ্রামে।

আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে স্কাইপেতে যুক্ত হয়ে নেতা-কর্মীর উদ্দেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নব্বইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন নব্বইয়ের সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতা শামসুজ্জামান দুদু, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিবুর রহমান হাবিব, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু, জহির উদ্দিন স্বপন, নাজিম উদ্দিন আলম, সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, খন্দকার লুত্ফুর রহমান, সাইফুল আলম নীরব, আসাদুর রহমান খান, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, নাজির উদ্দিন জেহাদের বড় ভাই কেএম বশির প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মীর সরফত আলী সপু, নিলোফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আখতার, হেলেন জেরিন খান, শহিদুল ইসলাম বাবুল, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আকরামুল হাসান, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, মামুন হাসান, এসএম জাহাঙ্গীরসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের সহাস্রাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। এর আগে দিবসটি উপলক্ষে সকালে রাজউক এভিনিউ মোড়ে শহীদ জেহাদ স্মৃতিস্তম্ভে বিএনপি নেতারা পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানায়।

অতীতের বিভিন্ন আন্দোলনে ছাত্রসমাজের ভূমিকার কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিবার যুগে যুগে পরিবর্তন নিয়ে এসেছে তরুণরা, ছাত্ররা। আজকে তোমাদের দিকে ভবিষ্যৎ তাকিয়ে আছে। যেমন গোটা জাতি আজকে তাকিয়ে আছে আমাদের নেতা তারেক রহমানের দিকে। ঠিক তেমনিভাবে আমরা সবাই তাকিয়ে আছি তোমাদের দিকে। তোমাদের জেগে ওঠতে হবে। এই ভয়াবহ দানবীয় হাসিনা সরকারকে বিদায় করতে হবে। সরকারকে সরিয়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে অবশ্যই এই দেশকে আমরা মুক্ত করব, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব, আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশকে ফিরিয়ে আনব-এই হোক আজকে জেহাদ দিবসে আমাদের শপথ।

দেশের অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে ভয়াবহ একটা পরিস্থিতি। সরকার বিচার বিভাগ, সংসদ, প্রশাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি সবকিছু ধ্বংস করেছে। মানুষ কথা বলতে পারে না, লিখতে পারে না। সাংবাদিকরা লিখতে পারে না। যারা টেলিভিশনে কথা বলতেন তারাও সাহস পান না। এ অবস্থায় আমাকে-আপনাকে যদি বাঁচাতে হয়, স্বাধীনতা ও নব্বইয়ের অর্জনকে যদি ফিরিয়ে আনতে হয় তাহলে অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে চলে যেতে হবে। পরিষ্কার করে বলতে হবে- সরে দাঁড়াও।

জেডআই/ডাকুয়া

আর্কাইভ