
প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০২৫, ১০:৩৬ পিএম
পটুয়াখালীর বাউফলের ছয়টি ইউনিয়ন—নাজিরপুর, ধুলিয়া, কেশবপুর, কালাইয়া, কাছিপাড়া ও চন্দ্রদ্বীপ—প্রতিনিয়ত তেতুলিয়া নদীর ভাঙনের কবলে পড়ছে। দীর্ঘদিন ধরে ভাঙন কবলিত মানুষদের প্রাণের দাবি ছিল—ত্রাণ নয়, চাই টেকসই ভাঙনরোধ ব্যবস্থা। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে লোক দেখানো প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও তা ছিল সম্পূর্ণ ব্যর্থ।
এই বাস্তবতায় মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেল ৪টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিবেশ ও বন অধিদপ্তর কার্যালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সাথে বৈঠক করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ও বাউফল উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। বৈঠকে বাউফল অঞ্চলের নদী ভাঙন রোধে নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, “মাননীয় উপদেষ্টা আমাদের কথা আন্তরিকভাবে শুনেছেন এবং দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা তাকে জানিয়েছি, বাউফলের নাজিরপুরসহ ছয়টি ইউনিয়ন এখন মারাত্মক ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। তেতুলিয়ার করাল গ্রাসে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, কবরস্থান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কৃষিজমি।”
তিনি আরও জানান, বৈঠকে ১০ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলা, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ, ৭ কিলোমিটার এলাকায় সিসি ব্লক নির্মাণ, গৃহহীনদের পুনর্বাসন এবং একটি ইকোপার্ক গড়ে তোলার প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।
ড. মাসুদ বলেন, “আমরা উপদেষ্টা মহোদয়ের আন্তরিকতা প্রত্যক্ষ করেছি। তিনি বৈঠকে আসার আগেই বাউফলের নদী ভাঙন পরিস্থিতি নিয়ে স্টাডি করেছেন। বৈঠকে আমাদের দেয়া স্মারকপত্রে স্বাক্ষর করে তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তা পাঠিয়েছেন এবং মৌখিকভাবে নির্দেশনাও দিয়েছেন।”
বৈঠকে তাৎক্ষণিক অর্জন হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন:
১. ভাঙন প্রতিরোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস,
২. ১০ কিলোমিটারে জিও ব্যাগ ফেলার নির্দেশনা,
৩. টেকসই ভাঙন রোধে সুপারিশ করার প্রতিশ্রুতি,
৪. নদীভাঙন কবলিত ইউনিয়নগুলো রক্ষায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার আশ্বাস।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট মুনতাসির মুজাহিদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান নজরুল, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ আল আমিন, আব্দুল্লাহ আল নোমানসহ বাউফল উন্নয়ন ফোরামের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।