প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ১২:১১ পিএম
বিএনপির ফাঁকা রাখা ৬৩ আসন নিয়ে দরকষাকষিতে শরিকরা। প্রকাশ্যে বেশি আসনের দাবি জানালেও পর্দার আড়ালে কেউ একটি, কেউ-বা দুইটি আসন নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করছেন। মিত্রদের জন্য আসন সমঝোতার পাশাপাশি উন্মুক্ত রাখা হবে ধানের শীষের বিপক্ষে নির্বাচন করার সুযোগ।
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ঘোষণা অনুযায়ী জাতীয় সরকার গঠনের আগে রাজপথের সহযোদ্ধাদের ভোটের মাঠেই বিএনপি যথাযথ মূল্যায়ণ করবে বলে বিশ্বাস যুগপৎ নেতাদের। তবুও তাদের ভাবিয়ে তুলছে, একাধিক আসনে বিএনপি নেতাদের স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা।
এদিকে, বিএনপি তার প্রাথমিক তালিকায় ফাঁকা রাখা আসনের মধ্যে ব্রাক্ষণবাড়িয়া-৬-এ জোনায়েদ সাকি, বগুড়া-২-এ মাহমুদুর রহমান মান্না, লক্ষ্মীপুর-৪-এ তানিয়া রব, শাহাদাত হোসেন সেলিম লক্ষীপুর-১, নুরুল হক নূর পটুয়াখালী-৩, রাশেদ খান ঝিনাইদহ-২, এলডিপি চেয়ারম্যান অলি আহমদ চট্রগ্রাম-১৩, রেদোয়ান আহমদের জন্য কুমিল্লা-৭ বরাদ্দ রেখেছে দলটি।
ঢাকা-১৭-এ আন্দালিব রহমান পার্থ, ঢাকা-১৩-তে ববি হাজ্জাজ, ১২ দলীয় জোটের এহসানুল হুদাকে কিশোরগঞ্জ-৫-এ বিবেচনা করছে বিএনপি।
ধর্মভিত্তিক দলগুলোর মধ্যে এবার বিএনপি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে দেওবন্দ অনুসারী হেফাজত ঘনিষ্ঠ জমিউতে উলামায়ে ইসলামকে।
জোটসঙ্গীদের জন্য মুন্সিগঞ্জ-১, কুষ্টিয়া-২, ঢাকা ১২ আসন থেকে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাহার হতে পারে।
এছাড়া, এনসিপির সাথে আসন সমঝোতা হলে পাঁচটি আসন ছাড়তে পারে বিএনপি। সেক্ষেত্রে নাহিদ ইসলামকে ঢাকা-১১, তাসনিম জারাকে ঢাকা-৯, হাসনাত আবদুল্লাহকে কুমিল্লা-৪, আখতার হোসেনকে রংপুর-৪ ও সারজিস আলমকে পঞ্চগড়-১ আসনের জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে। ঢাকা ৭, ১০ ও ১৮ আসনও যুগপৎ শরিকদের জন্য ছাড় দেয়ার চিন্তা আছে বিএনপিতে।
নেজামে ইসলামসহ সামাজিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজনের জন্যও আসন ছাড়ের সিদ্ধান্ত আছে বিএনপিতে। তবে সেই সংখ্যাটা ৪০ এর বেশি হবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
ফাঁকা থাকা ৬৩ আসনের মধ্যে বেশি কোন্দল থাকা, আসন উন্মুক্ত রাখাসহ বাকিগুলোর সিদ্ধান্ত আসবে মননোয়ন দাখিলের সময়।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, সংক্ষিপ্ত তালিকা নিয়ে বিএনপির সাথে আলোচনা করবো। মঞ্চের শীর্ষ নেতৃত্ব তো বটেই, এর বাইরেও তো মঞ্চের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ আছেন, সংগঠক আছেন, যারা আগে নির্বাচন করেছেন। যখন শরিকদের নিয়ে চলতে হবে তখন বড় অংশীজন হিসেবে বড় স্যাক্রিফাইসটা তো অবশ্যই বিএনপিকে করতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, এমনও হতে পারে কতগুলো আসন ওপেন থাকবে, যেখানে উভয় দলের প্রার্থীরা নির্বাচন করতে পারবেন। সেইভাবে আমরা পদ্ধতিগতভাবে বিষয়টিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা করছি।
আসন সমঝোতা হলেও শরিকদের জন্য বড় মাথা ব্যথা বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী ঠেকানো। এরইমধ্যে মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় কেউ কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এ নিয়ে জেএসডি`র সহ-সভাপতি তানিয়া রব বলেন, পরস্পরের বোঝাপড়ার আগেই কিন্তু এই কাজটা হয়েছে। সুতরাং বোঝাপড়ার পরে কী হবে সেটা তো আপনারা দেখবেন।
আর সাইফুল হক বললেন, বিএনপি এই নোংরা কোনও রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনুসরণ করবে না, এটা নিশ্চিয়ই আমরা আশা করবো।
চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শরিকদের সঙ্গে বিএনপির আসন সমঝোতার বৈঠক শুরু হবে বলে জানিয়েছেন নেতারা।