
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৫, ১০:১৪ পিএম
সবার জনা ঢাকার ৭৬ ক্লাবের মধ্যে ৬১ ক্লাব কাউন্সিলরষিপ পেলেও ১৫ ক্লাব কাউন্সিলরশিপ পায়নি। এই ১৫ ক্লাব হলো- এক্সিউম ক্রিকেট একাডেমি, ঢাকা ক্রিকেট একাডেমি, মোহাম্মদপুর ক্রিকেট ক্লাব, নবাবগঞ্জ ক্রিকেট কোচিং একাডেমি, পূর্বাচল স্পোর্টিং ক্লাব, গুলশান ক্রিকেট ক্লাব, ওল্ড ঢাকা ক্রিকেটার্স, ভাইকিংস ক্রিকেট একাডেমি, বনানী ক্রিকেট ক্লাব, নাখালপাড়া ক্রিকেটার্স, মহাখালী ক্রিকেট একাডেমি, ধানমন্ডি ক্রিকেট ক্লাব, প্যাসিফিক ক্রিকেট ক্লাব, স্যাফায়ার স্পোর্টিং ক্লাব এবং আলফা স্পোর্টিং ক্লাব।
ওপরে উল্লেখিত এই ক্লাবগুলোর ওপর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ‘অবজারভেশন’ আছে। তাই ঢাকার এই ক্লাবগুলোর কাউন্সিলরশিপের অধিকতর তদন্তের জন্য আরও কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সেই ক্লাবগুলোর কাউন্সিলরদের সমুদয় কাগজপত্রসহ বিসিবি নির্বাচন কমিশনের সামনে শুনানীতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়।
বলে রাখা ভালো, বিসিবির বর্তমান পরিচালক ও মিডিয়া কমিটি চেয়ারম্যান ইফতিখার রহমান মিঠু ও সাবেক বোর্ড পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়াও ওই গ্যাঁড়াকলে পড়ে কাউন্সিলর হতে পারেননি। শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশন ক্লাবগুলোর বৈধতা নিশ্চিত হয়ে কাউন্সিলরশিপ প্রদান করলেই কেবল ইফতিখার রহমান মিঠু ও লোকমান হোসেনসহ বাকি ১৩ ক্লাবের সংগঠকরা কাউন্সিলর হতে পারবেন।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার কাউন্সিলরশিপ নিয়ে আপত্তির শুনানী কার্যক্রমে অংশ নিয়ে নিজের পক্ষ নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি ওই ১৫ ক্লাবের বিষয়েও নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন তামিম ইকবাল। বিভিন্ন ব্যাখ্যা, যুক্তি ও বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেন তিনি। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে ওই ১৫ ক্লাব নিয়েও কথা বলেন দেশের ক্রিকেটের সব সময়ের সেরা ওপেনার তামিম।
অনেক কথার ভীড়ে তামিম ইকবাল বোঝানো চেষ্টা করেন, নির্বাচনে একটা পক্ষকে (তার পক্ষকে) দূর্বল করার জন্যই আসলে দুদকের অবজারভেশনের ধুয়া তুলে কাউন্সিলরশিপ না দেয়ার পাঁয়তারা চলছে।
তামিম মনে করেন, যে ১৫ ক্লাবের সংগঠকরা কাউন্সিলর হতে পারেননি, তাদের মধ্যে অন্তত তিন-চারজন ক্রিকেট অন্তঃপ্রাণ সংগঠক আছেন। যারা দেশের ক্রিকেট নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। ক্রিকেটের উন্নয়ন কার্যক্রমে নিজেকে জড়িয়ে রাখার চেষ্টা করেন। তারা যদি কাউন্সিলর হতে না পারেন, তাহলে ক্রিকেটকে ঘিরে তাদের স্বপ্ন ভেঙ্গে খান খান হয়ে যাবে।
পাশাপাশি যে ১৫ ক্লাব কাউন্সিলরশিপ পাবে না, তাদের তো আর লিগ খেলারও অধিকার থাকবে না। সেক্ষেত্রে এই ১৫ ক্লাবে গড়পড়তা যে ২০ জন করে মোট ৩০০জন ক্রিকেটার আছেন, তাদের কি হবে? সেই ৩০০ ক্রিকেটারের বেশির ভাগইতো ক্রিকেট খেলেই জীবিকা উপার্জন করেন। তাদে সংসারের কি অবস্থা হবে?
নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে তামিমের জিজ্ঞাসা, ১৫ ক্লাবের ইস্যুটা একটা অনগোয়িং ইস্যু। এটা ৬ মাস যাবতই চলমান। কিন্তু এখনই আপনাদের এই নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হলো কেন? ১৫ ক্লাবের অন্তত ৩/৪ জন যোগ্য কাউন্সিলর থাকতে পারেন যারা ক্রিকেটকে একটা অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেন। তাদের একটা স্বপ্ন থাকতে পারে। তারা যদি কাউন্সিলর হতে না পারে, তাহলে তাদের স্বপ্ন ভেঙ্গে দিলেন।
আজকে শুনানীতে যদি রায় ওই ক্লাবগুলোর বিপক্ষে যায়, তাহলে এই ক্লাবগুলোর আর কোন চান্সই নেই আর এবারের মত কাউন্সিলর হওয়ার। বরং ওই ক্লাবগুলোকে আগেভাগে যদি জানিয়ে দেয়া হতো যে, এই ক্লাব থেকে কাউন্সিলর হতে চাইলে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হতে পারে। দুদকের অবজারভেশনে থাকতে হতে পারে। তাহলে ওই সংগঠকরা হয়ত অন্য ক্লাব থেকে কাউন্সিলর হওয়ার চেষ্টা করতেন। তাদের একটা অপশন থাকতো।
শুধু যুক্তি, দলিল আর প্রমাণ না খুঁজে নির্বাচন কমিশনকে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েও ১৫ ক্লাবের ইস্যুটি দেখার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও এবারের নির্বাচনে বিএনপিপন্থীদের সম্ভাব্য সভাপতি প্রার্থী তামিম ইকবাল।
তার কথা, ‘শুনানীর সময় একটা কথা বলেছি, অনেক সময় আইনের উর্ধে গিয়েও মানবিক দিকটাকে দেখতে হয়। এখানে ১৫ ক্লাবে ৩০০ ক্রিকেটারের ক্যারিয়ারও জড়িত। তাদের ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে যাবে।’
তামিমের শেষ কথা, ‘একটা স্পষ্ট কথা, কাউকে বলার দরকার নেই। আমার মনে হয় আপনারা সবাই বোঝেন। একটা পক্ষকে দূর্বল করার জন্য এটা করা হচ্ছে। সবাই জানে। আমার কথা হলো যে জেতার জন্য বা নিজের ইচ্ছে পূরণ করার জন্য আপনারা ৩০০ ক্রিকেটারের জীবনের সাথে আপনারা খেলা শুরু করবেন? ইলেকশন করবেন। ইলেকশনে জিতবেন। ফেয়ার ইলেকশন হবে । যে আসবে, যার কাছে ভোট বেশি পড়বে, সে জিতে নিয়ে চলে যাবে। আমার হাম্বল রিক্যুয়েস্ট, নোংরামি করেন না। অনেস্ট ওয়েতে ইলেকশন করেন। ফেয়ার ওয়েতে করেন।’