• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ১৬ মে, ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

গ্রাহক থেকে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২২, ০৪:৩১ এএম

গ্রাহক থেকে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

গ্রাহক থেকে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার (১০ হাজার ৪৫০ কোটি) কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে দেশের শীর্ষ ১২টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। এক বছরে তারা এ অর্থ সংগ্রহ করে। বিপুল এ অর্থের ৩৪ শতাংশই অপ্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় করছে প্রতিষ্ঠানগুলো। ব্যাংক ও মোবাইল আর্থিক সেবার ৮৬টি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এসব অর্থ সংগ্রহ করেছে কোম্পানিগুলো।

গত ২০২১-২০২২ অর্থবছ‌রে সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে ৮ হাজার ৫৭১টি। আর ২০২০-২০২১ অর্থবছরে এ সংখ্যাটি ছিল ৫ হাজার ২৮০টি। অর্থাৎ এক বছরে সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছে ৩ হাজার ২৯১টি বা ৬২ দশমিক ৩২ শতাংশ। 

সোমবার (৩০ অক্টোবর) বাংলা‌দেশ ব্যাংকে অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। এ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএফআইইউর প্রধান মাসুদ বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জি এম আবুল কালাম আজাদ, বিএফআইইউ প‌রিচালক র‌ফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত প‌রিচালক কামাল হোসাইন প্রমুখ।

প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ই-কমার্স নিয়ে আমরা কাজ করেছি। কিছু ই-কমার্সের করপোরেট কাঠামো না থাকায় এগুলোর (প্রতিষ্ঠান) বিশ্লেষণে সমস্যা তৈরি হয়। সেসব প্রতিষ্ঠানের হিসাব-নিকাশ পরিচালনা করা হয় হতো নিজস্বভাবে, যেটা ছিল ব্যক্তি নির্ভর। অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে বন্ধ প্রতিষ্ঠানের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। ব্যাংক ও মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) মাধ্যমে লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

শীর্ষ ১২ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এক বছরে গ্রাহকের কাজ থেকে ১০ হাজার ৪৫০ কোটি টাকার সংগ্রহ করেছে। এসব অর্থের ৫ শতাংশ ব্যাক্তিগত কাজে ব্যয় হয়েছে। যার পরিমাণ অন্তত ৪৪১ কোটি টাকা। এসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মালিক ‘বাড়ি-গাড়ি, বিদেশ ভ্রমণসহ বিলাসী জীবনযাপনে বিপুল এ অর্থ ব্যয় করেছে।’ এছাড়া ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্ক নেই এমন খাতে ব্যয় করেছে মোট টাকার ৬ শতাংশ। যার পরিমাণ প্রায় ৫৯২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। বড় বড় ইভেন্টে স্পন্সর হিসাবে ব্যয় করা হয়েছে ৪৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

বিশ্লেষণ মতে, ৬ হাজার ১১৬ কোটি বা ৬৬ শতাংশ সরবরাহকারী ও বিক্রেতাদের দেওয়া হয়েছে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু ৩৪ শতাংশ অর্থই অপ্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় করা হয়েছে। যেসব খরচের সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে কারণ ছাড়াই খরচ হওয়া এসব অর্থ কোথায় গেছে তাও চিহ্নিত করতে পারেনি বিএফআইইউ।

প্রকাশিত প্রতিবেদন মতে, শীর্ষ ১২ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এক বছরে গ্রাহকের কাজ থেকে ১০ হাজার ৪৫০ কোটি টাকার সংগ্রহ করেছে। এসব অর্থের ৫ শতাংশ ব্যাক্তিগত কাজে ব্যয় হয়েছে। যার পরিমাণ অন্তত ৪৪১ কোটি টাকা। এসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মালিক ‘বাড়ি-গাড়ি, বিদেশ ভ্রমণসহ বিলাসী জীবনযাপনে বিপুল এ অর্থ ব্যয় করেছে।’ এছাড়া ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্ক নেই এমন খাতে ব্যয় করেছে মোট টাকার ৬ শতাংশ। যার পরিমাণ প্রায় ৫৯২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। বড় বড় ইভেন্টে স্পন্সর হিসাবে ব্যয় করা হয়েছে ৪৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৯৯৯টি সন্দেহজনক লেনদেনের রিপোর্ট পেয়েছি আমরা। আগের অর্থবছ‌রে (২০২০-২১) ব্যাংকগুলো মোট ৪ হাজার ৪৯৫টি রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। আলোচিত সময়ে ১০৬টি রিপোর্ট জমা দেয় আর্থিক প্র‌তিষ্ঠা‌ন এবং এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো জমা দেয় ৪৫৭টি রি‌পোর্ট। - বিএফআইইউ

প্রতিবেদনে উঠে আসে, দেশে এক বছরের ব্যবধানে আর্থিক খাতে সন্দেহজনক লেনদেন (এসটিআর) ও কার্যক্রম বেড়েছে ৬২ শতাংশের বেশি। গত ২০২১-২০২২ অর্থবছ‌রে সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে ৮ হাজার ৫৭১টি। আর ২০২০-২০২১ অর্থবছরে এ সংখ্যাটি ছিল ৫ হাজার ২৮০টি। অর্থাৎ এক বছরে সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছে ৩ হাজার ২৯১টি বা ৬২ দশমিক ৩২ শতাংশ। এছাড়া ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে সন্দেহজনক লেনদেন ও কার্যক্রম ছিল ৩ হাজার ৬৭৫টি, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ছিল ৩ হাজার ৫৭৩টি।

বিএফআইইউর ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৯৯৯টি সন্দেহজনক লেনদেনের রিপোর্ট পেয়েছি আমরা। আগের অর্থবছ‌রে (২০২০-২১) ব্যাংকগুলো মোট ৪ হাজার ৪৯৫টি রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। আলোচিত সময়ে ১০৬টি রিপোর্ট জমা দেয় আর্থিক প্র‌তিষ্ঠা‌ন এবং এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো জমা দেয় ৪৫৭টি রি‌পোর্ট।

এআরআই

আর্কাইভ