 
              প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৩, ০৬:৫০ পিএম
-20230425065012.jpg) 
                 
                            
              ঈদের ঠিক আগ মুহূর্তে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ৮ দিনে চিনির বাজার থেকে অন্তত ১০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। মিল থেকে সরবরাহ বন্ধ দাবি করে এই সময়ের মধ্যে প্রতিকেজি চিনির দাম ৮ থেকে ১০ টাকা করে বাড়ানো হয়। এ সময়ে ৩ হাজার ৮০০ টাকার প্রতি মণ চিনি পৌঁছে যায় ৪ হাজার ৪০০ টাকায়।
দেশের বৃহত্তম পণ্যের বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের সাধারণ ব্যবসায়ীদের দাবি, রোজার শুরুতেই পাইকারি পর্যায়ে প্রতি মণ চিনি ৩ হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ১৫ রমজান পর্যন্ত চিনির দামের তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি।
কিন্ত ১৮ রমজান থেকে শুরু হয় চিনির বাজারে কারসাজি। দৈনিক মণপ্রতি দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে। সেদিন প্রতি মণ চিনির দাম ছিল ৪ হাজার টাকা। এরপরে ২২ রমজান আরও ২০০ টাকা বেড়ে ঠেকে ৪ হাজার ২০০ টাকায় এবং ২৫ রমজান চিনির দাম আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৩৫০ টাকায়। আর ঈদের ঠিক আগ মুহূর্তে প্রতি মণ চিনি পৌঁছে যায় ৪ হাজার ৫০০ টাকার ঘরে।
দাম বাড়ার বিষয়ে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের খুচরা বিক্রেতা মনোরঞ্জন সাহা বলেন, ‘দেশের চিনির মিলগুলো ঠিকমতো সরবরাহ করতে পারছে না। এর জন্য দাম বাড়তি।’
আরেক খুচরা ব্যবসায়ী সমীর ঘোষ বলেন, ‘১৮/২০ রমজানের দিকের প্রতি মণ চিনির দাম ছিল ৪ হাজার টাকা বা বড়জোর ৪ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু ২০ রমজানের পর থেকে দাম বেড়ে ৪ হাজার ২৫০ টাকায় উঠে যায়।’
ডলার সংকটের মুখে চলতি অর্থ বছরের শুরু থেকে অন্যান্য পণ্যের মতো চিনির কাঁচামাল আমদানিও কমে গিয়েছিল। কিন্তু রমজান সামনে রেখে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে পর্যাপ্ত চিনি আমদানি হয়েছে। একইসঙ্গে মোংলা বন্দর দিয়েও চিনি আমদানির তথ্য জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বাজারে এখনও চিনির সরবরাহ বাড়াননি মিল মালিকরা।
বর্তমানে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১৪ টাকা দরে। বাজার কারসাজির অভিযোগ করে খাতুনগঞ্জের আফজাল আলী বলেন, ‘ঈদের আগে আগে ব্যবসায়ীরা বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেন। যার প্রেক্ষিতে বাজারে সরবরাহ নেই। তাই দামও উর্ধ্বমুখি।’
মিলাররা চিনি সরবরাহ করছে না অভিযোগ করে খাতুনগঞ্জের আরেক খুচরা বিক্রেতা আব্বাস আলী বলেন, ‘মিলাররা সরবরাহ করছেন না, তাই বাজারে চিনির সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা অগ্রিম অর্থ দিয়ে রেখেছি মিলগুলোয়, কিন্তু তারপরও তারা চিনি সরবরাহ করছে না।’
মূলত রফতানিকারক দেশগুলোতে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারেও দাম বাড়ছে বলে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে দাবি করছেন মিল মালিকরা। এবিষয়ে মেসার্স আলতাফ অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক আবদুল গফ্ফার বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মিলাররা বলছেন যে তাদের উৎপাদন খরচ বেশি হচ্ছে, যে জন্য বাজারে চিনির দাম বাড়ছে। আর মিলাররা আমাদের বলেছেন যে তারা শিগগরিই খুচরা প্রতি কেজি চিনির দাম ১২৫ টাকা করার প্রস্তাব দেবেন।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে বছরে ১৮ থেকে ২০ লাখ মেট্রিক টন চিনির চাহিদা রয়েছে। যার কাঁচামাল ৮ থেকে ১০টি প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে আমদানি করে।
দেশের বাজারে চলতি মাসের শুরুর দিকে চিনির দাম প্রতি কেজিতে ৩ টাকা কমিয়ে খুচরা পর্যায়ে প্যাকেটজাত চিনির দাম ১০৯ টাকা এবং খোলা চিনি ১০৪ টাকা নির্ধারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বিএস/
 
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
      