• ঢাকা সোমবার
    ০৬ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
বিদ্যুৎ ঘাটতি

পরিকল্পনার সঙ্গে বাস্তবায়নে মিল না থাকলে বিপর্যয়ের আশঙ্কা

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৩, ০৬:১৪ পিএম

পরিকল্পনার সঙ্গে বাস্তবায়নে মিল না থাকলে বিপর্যয়ের আশঙ্কা

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, আদানি থেকে নেয়া আর অনুকূল আবহাওয়ায় চাহিদা কমায় উন্নতি হচ্ছে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারায় ফের কোনো তিক্ত পরিস্থিতিতে পড়ার শঙ্কা নেই। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আবদুল হাসিব চৌধুরী সতর্ক করেছেন, পরিকল্পনার সঙ্গে বাস্তবায়নের মিল না থাকলে সামনে আসতে পারে আরেক দফা বিপর্যয়।

সপ্তাহ ব্যবধানে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি এখন অনেকটাই সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। মাসের শুরুতে দাবদাহ আর পাল্লা দিয়ে তীব্র লোডশেডিং যে নাভিশ্বাস পরিস্থিতি তৈরি করেছিল জনজীবনে, সে নাজুক অবস্থা বদলেছে বলেই জানান গ্রাহকরা।

সপ্তাহখানেকের বড় বিপর্যয় পেরিয়ে বিদ্যুতে স্বস্তি ফেরার পেছনে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে তেল ও গ্যাসভিত্তিক কয়েকটি কেন্দ্রের উৎপাদন বৃদ্ধি আর আদানি থেকে বিদ্যুৎ আমদানি আরও ৩০০ মেগাওয়াট বাড়ানো। অন্যদিকে প্রকৃতিতে স্বস্তির হাওয়া বিদ্যুৎ চাহিদা কমিয়েছে দুই হাজার মেগাওয়াটের মতো, যা এখন নেমে এসেছে ১৪ থেকে ১৫ হাজার মেগাওয়াটের ঘরে।

বিদ্যুৎ বিভাগের পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন, আবহাওয়াটাও আমাদের পক্ষে ছিল, বিদ্যুৎ উৎপাদন কিন্তু প্রতিনিয়ত বাড়ানো হচ্ছে। আশা করছি, সেই ধারাটা অব্যাহত থাকবে।  

তবে লোডশেডিং যে একেবারেই কেটে গেছে তেমনটি নয়। গত দেড় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় গত বৃহস্পতিবার ১৪ হাজার ৬৫৫ মেগাওয়াট, কিন্তু সেদিনও লোডশেডিং করতে হয় ৪৭০ মেগাওয়াট। পূর্বাভাস রয়েছে, তাপমাত্রা বাড়লে বিদ্যুৎ চাহিদা আবারও উন্নীত হতে পারে ১৬ থেকে ১৭ হাজার মেগাওয়াটে। যা ইঙ্গিত দিচ্ছে, আগের চেয়ে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও এখনো রয়ে গেছে নানা চ্যালেঞ্জ।

সেক্ষেত্রে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল হাসিব চৌধুরী সতর্ক করছেন, পর্যাপ্ত জ্বালানি সংস্থান নিরবচ্ছিন্ন রাখতে না পারলে আবারও বেগতিক হতে পারে পরিস্থিতি।

ড. আবদুল হাসিব চৌধুরী বলেন, বিদ্যুতে স্বস্তি আসাটা এটা একটা সাময়িক ব্যাপার; আবহাওয়ার কারণে একটু স্বস্তিতে আছি বলে সামনেও আবার স্বস্তিতে থাকা যাবে; এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। ফুয়েলের ঘাটতি আছে অথবা আবার তাপমাত্রা বাড়তে যাচ্ছে; কয়লা তো শেষ হয়ে যাচ্ছে, তার কী পরিমাণ চাহিদা রয়েছে বিদ্যুতের সেগুলোর হিসাব করা আছে এবং সবারই তো জানা আছে। আসল জিনিসিটা হচ্ছে প্ল্যানিং আর ম্যানেজমেন্ট করা।  

যদিও বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি, জ্বালানির জোগান নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে যাওয়ায় আগামীতে পড়তে হবে না তেমন কোনো সংকটে।

মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, চলতি মাসের ২২ তারিখের পরে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ শুধু আমরা পায়রা থেকে পাব। এসআলম গ্রুপ থেকে ৬০০ প্লাস মেগাওয়াট পাব। আদানি থেকে এখন পাচ্ছি ১১০০ সামনে পাব ১৬০০ মেগাওয়াট। তখন চাহিদা বাড়ল এবং আমাদের পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে।  

তবে বিদ্যুৎ বিভাগের পরিকল্পনা যেন বাস্তবায়নের বেলায় হোঁচট না খায়, সেদিকে নজর রাখার তাগিদ দেন অধ্যাপক ড. আবদুল হাসিব চৌধুরী।

 

জেকেএস/

অর্থ ও বাণিজ্য সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ