
প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৫, ০৫:৪৭ পিএম
পটুয়াখালীর বাউফলের নাজিরপুর ছোট ডালিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেওয়া এক শিক্ষিকার ৪১ মাস পর পুনরায় যোগদান এবং অনিয়মের মাধ্যমে দীর্ঘ সময়ের বেতন ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তদন্তে আসলে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক অভিযুক্ত শিক্ষিকার পক্ষে সুপারিশ করায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক মাসুমা বেগম ২০১১ সালের ৪ এপ্রিল যোগদান করেন এবং ২০১২ সালের ১ নভেম্বর এমপিওভুক্ত হন। কিন্তু তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়ে না আসলেও নিয়মিত বেতন-ভাতা গ্রহণ করতেন, যা বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভার কার্যবিবরণীতেও উল্লেখ রয়েছে। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ তিনি শারীরিক অক্ষমতার কথা উল্লেখ করে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন। প্রধান শিক্ষক মো. মাহবুব আলম ওই সময় এমপিও থেকে মাসুমার নাম কর্তনের জন্য শিক্ষা অধিদপ্তরে চিঠি পাঠালে তার নাম এমপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়।
তবে ২০২২ সালের ১৩ আগস্ট অর্থাৎ ৪১ মাস পর পুনরায় তিনি আগের পদে যোগদান করেন এবং অভিযোগ রয়েছে, প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় এ সময়ে তিনি বেতন-ভাতা উত্তোলন করেছেন। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হলেও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অনিয়মকে নিয়মে রূপ দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, ওই শিক্ষিকা সাবেক সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের এপিএস মাহবুবুর রহমানের আপন বোন হওয়ায় ক্ষমতার প্রভাব ব্যবহার করা হয়েছে।
এই অনিয়মের বিরুদ্ধে স্থানীয় সংবাদকর্মী রাশিদুল ইসলাম ইজাজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করলে গত সোমবার (২৫ আগস্ট) একটি তদন্ত কমিটি বাউফলে আসে। তদন্ত চলাকালে বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি মো. শামিম আনোয়ারের ভাই কেনান এবং অভিভাবক সদস্য জহিরুল্লাহ অভিযোগকারী সাংবাদিক ইজাজের সঙ্গে অসদাচরণ ও প্রকাশ্যে হুমকি দেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তাদের বরাতে জানা যায়, স্থানীয় তিনজন সাংবাদিক অভিযুক্ত শিক্ষিকার পক্ষে সুপারিশ করেছেন। এ ঘটনায় অভিযোগকারী সাংবাদিক ইজাজ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জানিয়ে সোমবার রাতেই বাউফল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তিনি বলেন, “আমি কেবল ন্যায়বিচারের স্বার্থে অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। এখন তদন্ত প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে এবং আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।”
স্থানীয়রা মনে করছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম রক্ষায় সাংবাদিকদের সুপারিশ অত্যন্ত দুঃখজনক। এতে সঠিক তদন্ত বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে বাউফল থানার ওসি মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান সরকার বলেন, “তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, “তদন্তের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।