• ঢাকা মঙ্গলবার
    ০৫ আগস্ট, ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২

ভ্যাকসিন শঙ্কট দূর হচ্ছে সহসাই!

প্রকাশিত: মে ৬, ২০২১, ০৯:৫৭ পিএম

ভ্যাকসিন শঙ্কট দূর হচ্ছে সহসাই!

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের মজুদ শেষ হওয়ার পথে। ভারত সরকার সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড (অ্যাস্ট্রাজেনেকা) ভ্যাকসিনের রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় এই শঙ্কট তৈরি হয়েছে। কারণে ২৬ এপ্রিল থেকে দেশে প্রথম ডোজের টিকা দেয়া বন্ধ রয়েছে।

কিন্তু সরকার টিকাদান কর্মসূচি চলমান রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা চালালেও এখনো বিকল্প উৎস থেকে ভ্যাকসিনের বিপুল পরিমাণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারেনি। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, মজুদ হিসেবে আর ১৪ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আছে। ভারত থেকে নতুন কোনো চালান আসার সম্ভাবনা আপাতত নেই।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সূত্র মতে, যদি বর্তমান মজুদ শেষ হওয়ার আগে নতুন কোনো চালান না আসে, তাহলে দেশে ভ্যাকসিনের সংকট দেখা দেবে। তবে দ্রুততর সময়ে শঙ্কট দূর করতে কাজ করছে সরকার। 

প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধ করার পর থেকেই সরকার রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি, চীনের সিনোফার্ম অন্যান্য উৎস থেকে ভ্যাকসিন কেনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। চীন উপহার হিসেবে সিনোফার্ম ভ্যাকসিনের পাঁচ লাখ ডোজ দিতে চেয়েছে। তারা আশা করছে, বাংলাদেশ এই ভ্যাকসিনগুলো বেইজিং থেকে নিজ খরচে নিয়ে আসবে।

বাংলাদেশের সরকার মুহূর্তে রাশিয়ার সরকারের সঙ্গে স্পুটনিক-ভি ভ্যাকসিন কেনার জন্য একটি চুক্তি নিয়ে কাজ করছে। তবে বাংলাদেশ এখনো চীনের কাছে গত সপ্তাহে দেয়া সিনোফার্ম ভ্যাকসিন কেনার প্রস্তাবের কোনো উত্তর পায়নি।

বিকল্প ভ্যাকসিন কেনার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার জন্য ইতোমধ্যেই দেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর স্পুটনিক-ভি সিনোফার্ম ভ্যাকসিনকে জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, ‘শিগগিরই চীনের কাছ থেকে উত্তর পাওয়া যাবে বলে আমরা আশা করছি।স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইট ১০ মে বেইজিংয়ে গিয়ে সিনোফার্ম ভ্যাকসিনের পাঁচ লাখ ডোজ নিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, সিনোফার্ম ভ্যাকসিনটি প্রথম ডোজ দেয়ার জন্যে ব্যবহার করা হবে।

ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর সাংবাদিকদের জানিয়েছে, তারা সিনোফার্ম ভ্যাকসিনটিকে দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচিতে ব্যবহার করার আগে প্রথমে এক হাজার মানুষকে টিকা দেবেন। ফলাফল পর্যালোচনা করবেন।

২০২০ সালের শুরুর দিকে বেইজিং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রডাক্টস বিবিআইবিপি-করভি নামের নিষ্ক্রিয় করোনাভাইরাসের একটি টিকা তৈরি করে, যা সিনোফার্ম নামেও পরিচিত। চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মিসর, পাকিস্তানসহ আরও কয়েকটি দেশ বর্তমানে টিকা ব্যবহার করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এখনো টিকার অনুমোদন দেয়নি। 

ডব্লিউএইচওর পরামর্শক প্যানেল জানিয়েছে, সিনোফার্ম নিজেদের টিকার কার্যকারিতা বিষয়ক নথি তাদের সামনে উপস্থাপন করেছে। দিকে যারা ইতোমধ্যে কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ পেয়েছেন, তারা দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। তবে বাংলাদেশ আশা করছে, তারা প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ছয় কোটি অতিরিক্ত ডোজ রয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী . কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এক থেকে দুই কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দেশের চলমান টিকা কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্তত ৪০ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা চাওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারের সাথে বৈঠকে এই আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আরিয়ান/এম. জামান

আর্কাইভ