• ঢাকা মঙ্গলবার
    ০৭ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের হাল ফেরাতে চাষে নামছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২৪, ০৯:৩৫ এএম

দেশের হাল ফেরাতে চাষে নামছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

অর্থনৈতিক মন্দায় ভুগছে পাকিস্তান। মূল্যস্ফীতি বেড়ে আকাশে। মুদ্রার মান কমে ইতিহাসের তলানিতে। দেশের রিজার্ভেও দেখা দিয়েছে চরম ঘাটতি। বিদেশি ঋণের দায়, আর একই সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে একেবারেই বেহাল দশায় পুরো পাকিস্তান। জরাগ্রস্ত দেশের হাল ফেরাতে রীতিমতো চাষে নেমে পড়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। জিইও টিভি, দ্য নিউজ।

পাঞ্জাবের পর, এবার সিন্ধু একটি সদ্য স্বাক্ষরিত চুক্তির মাধ্যমে করপোরেট ফার্মিংয়ের রাজ্যে প্রবেশ করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। করপোরেট ফার্মিং চালু করতে সিন্ধু সরকার ও মেসার্স গ্রিন করপোরেট (প্রাইভেট) লিমিটেডের মধ্যে একটি সরকার-টু-সরকার (জি২জি) যৌথ উদ্যোগের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

শনিবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজের খবরে বলা হয়েছে, সিন্ধুর তত্ত্বাবধায়ক রাজস্বমন্ত্রী ইউনুস ধাগা শুক্রবার সিএম হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে চুক্তির ঘোষণা দেন। তার সঙ্গে ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক আইনমন্ত্রী ওমর সুমরো, তথ্যমন্ত্রী মুহাম্মদ আহমদ শাহ এবং মেজর জেনারেল শহীদ নাজির। এ পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ৫২ হাজার ৭১৩ একর পরিমাণ জমি ২০ বছরের জন্য সেনাবাহিনীর হাতে দেওয়া হবে। দেখা-শোনা, পরিচর্যা থেকে শুরু করে কৃষিকাজের নিয়ন্ত্রণ থাকবে সেনাবাহিনীর হাতেই।

এই উদ্যোগটি স্পেশাল ইনভেস্টমেন্ট ফ্যাসিলিটেশন কাউন্সিলের (এসআইএফসি) ছাত্রছায়ার অধীনে চালু করা একটি প্রকল্পের অংশ। এসআইএফসি মূলত দেশের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার একটি পরিকল্পনা। এই প্রকল্পের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার জেলা প্রশাসকরা প্রায় ৫২ হাজার ৭১৩ একর পরিমাপের অনুর্বর জমি চিহ্নিত করেছেন। যার মধ্যে ২৮ হাজার একর খায়রপুর, ১০ হাজার একর থারপারকার, ৯ হাজার ৩০৫ একর দাদুত, এক হাজার একর ঠাট্টা, তিন হাজার ৪০৮ একর সুজাওয়াল এবং এক হাজার একর বাদিন অঞ্চলে রয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, জমির মালিকানা সিন্ধু সরকারের কাছেই থাকবে।

চুক্তির অধীনে, গ্রিন করপোরেট ইনিশিয়েটিভ লিমিটেড নিট লাভের ২০ শতাংশ  স্থানীয় এলাকায় গবেষণা এবং উন্নয়নে ব্যয় করবে। ৪০ শতাংশ সরাসরি সিন্ধু সরকারের কাছে যাবে। লাভের অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ স্থানীয় অবকাঠামো, সেচ চ্যানেল, সৌরচালিত পানি সরবরাহ স্কিম, স্কুল, হাসপাতাল, উন্নয়ন প্রকল্প এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাগুলোতে ব্যয় করা হবে।

জমি অধিগ্রহণের আগে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই ও জরিপ করা হবে। জরিপটি অবশ্যই নিশ্চিত করবে, এটি কোনো সুবিধাজনক জমি, জনসাধারণের উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত জমি, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্থান, জনবসতিপূর্ণ এলাকা, ম্যানগ্রোভ আবাসস্থল ও সংরক্ষিত বনসহ বনভূমি, চারণভূমি, কবরস্থান, ঐতিহাসিক জলপথ, অভ্যন্তরীণ জল, সেচের মধ্যে পড়ে না। স্থানীয় জনগণ যাতে এতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় জনগণের কোনো পানির অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হবে না সে বিষয়ে নিশ্চিত করা হবে। জমি শুধুমাত্র কৃষিকাজে ব্যবহার করা হবে।

কোনো পার্শ্ব ব্যবসা বা কার্যকলাপের অনুমতি দেওয়া হবে না। প্রকল্পের জন্য, সিন্ধু মুখ্য সচিবের অধীনে একটি পরিচালনা বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে পরিকল্পনা কার্যকর করার জন্য বোর্ডের সদস্যরা একসঙ্গে সব সিদ্ধান্ত নেবেন। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের জুনে পাঞ্জাবের তিন জেলার প্রায় ৪৫শ একর জমি ২০ বছরের জন্য লিজ নেয় সেনাবাহিনী।

আর্কাইভ