• ঢাকা শনিবার
    ১৭ মে, ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংস করেছে: সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে তুহিন

প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২৫, ০৮:১৯ পিএম

আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংস করেছে: সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার  ভাগ্নে তুহিন

নীলফামারী প্রতিনিধি

বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে ও নীলফামারী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন বলেছেন,‘গত আঠারো বছর যাবত ফ্যাসিস্ট মাফিয়া আওয়ামী সরকার দেশকে ধ্বংস করেছে। তারা উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। শুধু লুটপাটেই না তারা হত্যা করেছে বিএনপির অসংখ্য নেতা কর্মীকে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই গুম বা হত্যা করা হতো। তারা ধ্বংস করেছে দেশের অর্থনীতিকে। ধ্বংস করেছে এদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। তারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে, তারা আইন-আদালত ধ্বংস করেছে। এমন কোন সেক্টর নেই যে তারা ধ্বংস করে নাই।’

শনিবার (১৭ মে) বিকালে দীর্ঘ ১৮ বছর পর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও নিজ জন্মস্থান ডোমারে আগমন উপলক্ষে ডোমার উপজেলা ও পৌর বিএনপির আয়োজনে গণ সংবর্ধনা ও বিশাল জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন,‘আজকে সংস্কারের আওয়াজ উঠেছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে সংস্কারের বিষয়ে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান অনেক আগেই ৩১ দফার একটি সংস্কারের প্রস্তাব আপনাদের সামনে তুলে ধরেছেন। আমাদের বিএনপির চেয়ারম্যান আপনাদের সামনে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে। শুধু সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন বিঘ্নিত জনগন মেনে নিবে না।
তিনি বলেন  আমরা এই সরকারকে যেভাবে সহযোগিতা করছি সেই সহযোগিতা দেশের আপামর জনগণও করছে। বিএনপির এই সংস্কারের প্রস্তাবকে সঙ্গে নিয়ে আরও অন্যান্য দলের যে সংস্কার প্রস্তাব আছে, সেগুলোকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংক্ষিপ্ত করে দেশকে একটি গণতান্ত্রিক পন্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে।’

নির্বাচনের ব্যাপারে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহনের আহবান জানান তিনি বলেন তিনি।
তিনি বলেন  এই সরকার নাকি বৈষম্য দূর করছে। অথচ আমি তো নিজেই সরকারের বৈষম্যের শিকার।  বৈষম্য তারা দূর করতে এখনো পারেনি। আমরা আশা করব যে সরকার আরো সিরিয়াস হবে বৈষম্য দূর করার ব্যাপারে। আমরা চাই গণতান্ত্রিক উপায়ে সকলকে নিয়ে  জনগনের সকলের আকাঙ্ক্ষা যাতে প্রতিষ্ঠিত হয় সেই কারনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি দলের ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন,‘ একটা দল আপনারা জানেন খুব অল্প দিন আগে তাদেরও সকল কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যতদিন পর্যন্ত বিচার শেষ না হয়। দলের অনেক নেতাকর্মী আছেন, অনেক সমর্থক আছে যারা হয়তো বা খারাপ না। তাদের নেতা কর্মী, তাদের সর্বোচ্চ লেভেলের যারা নেতা কর্মী ছিলেন তাদের খারাপ কর্মকান্ডের জন্য আজকে তারাও এই রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে নিষিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে আর কোন দল এরকম নিষিদ্ধ হোক এটা আমরা গণতান্ত্রিক ভাবে চাই না। আমরা চাই যে একটা গণতান্ত্রিক চর্চা, মানুষের অধিকার তারা প্র্যাকটিস করুক।’

রংপুর বিভাগ অবহেলিত উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘এই নীলফামারী ও রংপুরের মাটিতে আমরা আর অবহেলিত থাকতে চাই না। নীলফামারী রংপুর অঞ্চলের মানুষ আমরা বহুদিন ধরে পিছিয়ে আছি। আমাদের দুর্ভাগ্য যে ওই নোয়াখালী ,কুমিল্লা , ঢাকার মানুষরা উন্নত হয়। তাদের বাচ্চারা দেখা যায় যে বড় হয়ে বড় বড় চাকরি পায় আর আমাদের বাচ্চারা এখানে পড়ে থাকে। আমাদের এখানে বড় বড় হাসপাতাল নাই কেন। বিশ্ববিদ্যালয় নাই কেনো। বাংলাদেশের বেশিরভাগ জেলায় এখন বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় আছে। আমাদের কি অধিকার নাই । এটা আদায় করতে হলে আমাদেরকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

গণ-সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেয়াজুল ইসলাম কালুর সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক আখতারুজ্জামান সুমন ও পৌর সম্পাদক মোজাফ্ফর আলীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, আমিনুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি আনিছুর রহমান আনু, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি রায়হানুল হক প্রধান ইউসুফ  ও জেলা যুবদলের সম্পাদক শাহাদাত হোসেন বক্তব্য রাখেন । অনুষ্ঠানে উপজেলা ও পৌর বিএনপির প্রতিটি ইউনিটের সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনকে ফুল ও সম্মাননা স্বারক দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এর আগে বিএনপির জনসভা ও তুহিনকে এক নজর দেখার জন্য বিকাল তিনটার মধ্যেই ডোমার হাইস্কুল মাঠটি জন সমুদ্র পরিনত হয়।  তুহিন মাঠে প্রবেশ করার সাথে সাথেই দলের নেতাকর্মীরা শ্লোগানে শ্লোগানে জনসভাকে প্রানবন্ত করে রাখে। হাজার হাজার নেতাকর্মীর ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পরেন তিনি। এ সময় হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের ভালোবাসার জবাব দেন তিনি। এ সময় তার সহধর্মিণী তার পাশে ছিল।

দেশজুড়ে সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ