প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১, ০৭:১৮ পিএম
কয়েকদিন ধরে শুরু হয়েছে তীব্র গরম। তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩৪ ডিগ্রি
সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। এর মধ্যে ঘনঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ রংপুরবাসী। চাহিদার
তুলনায় কম উৎপাদনের কারণে প্রতিনিয়ত এমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে দাবি বিদ্যুৎ
বিভাগের। ঘনঘন লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজের ফলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ অফিস-আদালতগুলোতে
কাজের স্বাভাবিক গতি হারাচ্ছে। অনেক মূল্যবান ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে
যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৪
সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ২ থেকে ৩ ঘণ্টা ধরে
বিদ্যুতের দেখা মেলেনি। সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধার পর হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়
নগরীতে। প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পর বিদ্যুতের দেখা মেলে। এর আগে শনিবার, রোববার
কোথাও সকালে, কোথাও দুপুরে ও রাতে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত
চলে লোডশেডিং।
একই অবস্থা
জেলার উপজেলাগুলোতেও। একবার বিদ্যুৎ গেলে তার দেখা যেন সহজে আর পাওয়া যাচ্ছে না। প্রায়
প্রতিদিন নগরীর কোনো না কোনো এলাকায় এমন পরিস্থিতি থাকায় গ্রাহকেরা তীব্র ক্ষোভ
প্রকাশ করেছেন।
নর্দান
ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড রংপুর অফিস সূত্রে জানা যায়, রংপুর
বিভাগের আট জেলায় পল্লী বিদ্যুৎ ও নেসকোর বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে গড়ে প্রায় ৮৫০
মেগাওয়াট। দুই দিন ধরে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে ৬০০ থেকে ৮৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ
পাওয়া যাচ্ছে।
এছাড়া
বড়পুকুরিয়া কেন্দ্রের উৎপাদনের ক্ষমতা ৫২৫ মেগাওয়াট। ওই কেন্দ্র থেকে দেড় শ’
মেগাওয়াট পেয়ে এলেও কয়েকদিন ধরে সেখান থেকে ৭৬ মেগাওয়াট পাচ্ছে। আর এতে করেই
লোডশেডিংয়ে পড়ছে রংপুরের নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসেকো) ও
পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকেরা।
রংপুর নগরীর
মুলাটল এলাকার বাসিন্দা জিতু কবির সিটি নিউজকে বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে
রংপুরে তীব্র গরম চলছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলায় আমরা অতিষ্ঠ।
সকালে বিদ্যুৎ থাকে না, আবার এসে দুপুরে থাকে না। এ ছাড়া রাতে
৩ থেকে ৪ ঘণ্টার লোডশেডিং তো এখন নিত্যসঙ্গী আমাদের।’
নগরীর ধাপ
এলাকার শিক্ষার্থী আফ্রিদা জাহিন বলেন, ‘এখন স্কুল
খুলেছে। পড়ালেখা করতে হয়। কিন্তু অনেক সময় বিদ্যুৎ না থাকায় ঠিকমতো পড়ালেখা করতে
পারছি না।’
নগরীর মেসার্স
সিটি ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার আশরাফুল মিয়া বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে ঘন
ঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ফিলিং স্টেশনের কার্যক্রম জেনারেটর দিয়ে চালানো হচ্ছে।
এভাবে বিদ্যুতের বিভ্রাটে আমরা চরম দুর্ভোগে পড়েছি।’
সুশাসনের জন্য
নাগরিকের (সুজন) মহানগর কমিটির সভাপতি ফখরুল আনাম বেঞ্জু সিটি নিউজকে বলেন,
‘কয়েকদিন
আগে প্রধানমন্ত্রী চারটি বিদ্যুৎ প্লান্টের উদ্বোধন করলেন। রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ
উৎপাদন হচ্ছে বলে জানালেন তিনি। কিস্তু দুঃখের বিষয় রংপুরে বিদ্যুতের চোর-পুলিশ
খেলা চলছে।’
তিনি আরও বলেন,
‘ডিজিটাল
বাংলাদেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। দেশে এখন ২৪ হাজারের
বেশি মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। আমরা চাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই
সমস্যার সমাধান করুন।’
রংপুর অঞ্চলের
নেসকোর প্রধান প্রকৌশলী শাহাদৎ হোসেন সরকার বলেন, ‘উৎপাদন কমে আসায়
লোডশেডিং করে চালাতে হচ্ছে। দিনাজপুর বড়পুকুরিয়া কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ১৫০
মেগাওয়াট পেয়ে এলেও কয়েকদিন ধরে সেখানে অর্ধেক অর্থাৎ ৭৫ থেকে ৭৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ
পাচ্ছে।’ খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে বলে জানান তিনি।
সবুজ/এম. জামান