• ঢাকা সোমবার
    ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঘর বানানোর পরই বিয়ে করার কথা ছিল প্রবাসী হেলালের

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২২, ০৯:৫৩ পিএম

ঘর বানানোর পরই বিয়ে করার কথা ছিল প্রবাসী হেলালের

শোকাহত হেলালের পরিবার

বরগুনা প্রতিনিধি

দীর্ঘ বছর প্রবাসে থাকার পরে গত মাসে দেশে ফেরেন কদলতলা নিবাসী মালয়েশিয়া প্রবাসী হেলাল। বাড়িতে এসে নতুন ঘর নির্মানের জন্য ইট কিনেন তিনি। ঘরের কাজ শেষ হলেই বিয়ে করার করার কথা ছিল হেলালের। ইতিমধ্যে তার পরিবার বিয়ের জন্য পাত্রী দেখাও শুরু করেছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মমতায় নতুন ঘর তুলতে গিয়েই প্রাণ গেল তার। কান্নাজড়িত কণ্ঠে এমনটাই জানাচ্ছিলেন বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত তিনজনের একজন মো. হেলালের মা।

নিহত প্রবাসী মো. হেলাল (৩৫) বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের রায়ভোগ কদমতলা গ্রামের হারুন হাজীর ছেলে। নিহত অন্য দুজনও একই এলাকার বাসিন্দা। ছেলেকে কবরে রেখে এসে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন হেলালের বাবা হারুন।

নিহত হেলালের মা বলেন, ‘মোর পোলা দেশে ফিরেই বাড়ির কাজ শুরু করে। ঘর বানানোর জন্য ইট কিনে আনে। লেবারেগো লগে লইয়া নিজেই সব কাজ করত। ওর মামাতো ভাই ও মোগো বাড়ির পাশের আরও দুই চাচাত ভাইকে নিয়ে কাইলগো পুরনো ঘরের টিনের চাল খুলতে যাইয়া মরে গেল মোর বাবায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘একলগে মোগো তিন মায়ের কোল খালি হয়ে গেল। মোট এই এউক্কা পোলা ছিল। আশা ছিল পোলারে বিয়া হরামু, নাতি-নাতনি নিয়ে বাকিটা জীবন কাটাবো মোর। কিন্তু মোর ভাগ্যে এসব আছিল না হয়ত। সবাই মোর ছেলেসহ মারা যাওয়া সবার জন্য দোয়া করবেন৷ আল্লাহ যেন ওদের বেহেশত নসীব করেন।’

এর আগে আজ বেলা সাড়ে দশটার দিকে স্থানীয় একটি স্কুলমাঠে একসঙ্গে নিহত তিন জনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর পারিবারিক করবস্থানে তাদেরকে দাফন করা হয়। এসময় আত্মীয়স্বজন, জনপ্রতিনিধিসহ শত শত স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের রায়ভোগ কদমতলা গ্রামের হারুন হাজীর ছেলে মো. হেলাল দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে মালয়েশিয়া প্রবাসী ছিলেন। গত মাসের ১১ তারিখ তিনি বাড়ি আসেন। এরপর নতুন পাকা ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এরপর গতকাল শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে মামাতো ভাই বেলায়েত, প্রতিবেশী চাচাত ভাই রবিউল ও আরিফকে নিয়ে পুরনো ঘরটি অপসারণ করতে যান। এসময় পাশে থাকা বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে ঘরের টিনে লেগে যায় এবং চারজনই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।

ঘটনাস্থলেই বেলায়েত, হেলাল ও রবিউল মারা যান। আরিফকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনরা। তার অবস্থা গুরুতর হলে পরে তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

 

এআরআই

আর্কাইভ