• ঢাকা সোমবার
    ০৬ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

তিন বছর পর কবর থেকে কিশোরীর মরদেহ উত্তোলন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২, ১২:৪৫ এএম

তিন বছর পর কবর থেকে কিশোরীর মরদেহ উত্তোলন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

অপমৃত্যু নয়, মেয়েকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে; মায়ের এমন অভিযোগে আদালতের নির্দেশে দাফনের ৩ বছর পর রিয়া আক্তার (১৩) নামের এক গৃহকর্মী কিশোরীর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী এলাকা থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফেরদৌস আরা উপস্থিত থেকে ওই কিশোরীর মরদেহ উত্তোলন করেন।

এর আগে চলতি বছরের ১ মে গোয়েন্দা পুলিশকে গৃহকর্মীর মৃত্যুর কারণ, ডিএনএ টেস্ট করার জন্য মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করার নির্দেশ প্রদান করেন ঢাকার সিএমএম আদালত।

নিহতের মা কুলসুম বলেন, ‘ঢাকার ধানমন্ডিতে মমিনুলের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতো রিয়া। ২০১৯ সালের ১৬ আগস্ট রিয়া আক্তারকে ধর্ষণ করে ১০ তলা বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ তাড়াহুড়া করে আমার মেয়ের মরদেহ নিজ বাড়ি জামালপুরে না পাঠিয়ে তার নানার বাড়ি লক্ষ্মীপুরে মাইক্রোবাসে করে পাঠিয়ে দেয়। জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হলেও পুলিশ টাকার বিনিময়ে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে।’

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি করেন রিয়া আক্তারের মা। তিনি বলেন, ‘আমার মতো আর কোনো মায়ের বুক এইভাবে যেন খালি না হয়, সেটাই প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমার আকুতি।’

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফেরদৌস আরা বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে প্রায় তিন বছর পর গৃহকর্মীর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। সঠিক তদন্তে মৃত্যুর রহস্য বেরিয়ে আসবে।’

উল্লেখ্য, ঢাকা ধানমন্ডি এলাকায় মমিনুলের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতো রিয়া আক্তার। ২০১৯ সালের ১৬ আগস্ট ভোর রাতে রিয়া আক্তারকে ধর্ষণ করে বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় পুলিশ ধানমন্ডি থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে। পরে পুলিশ ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছে বলে প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর আদালতে ওই প্রতিবেদন নারাজি দেয় গৃহকর্মীর মা কুলসুম। এ ঘটনায় বাড়ির মালিক মমিনুল হকসহ ৯ জনকে আসামি করে সিএমএ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন। পরে ওই মামলা তদন্ত করে আসামিরা জড়িত নয় বলে প্রতিবেদন দেন সিআইডি।

এরপর ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করলে পুনরায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন আদালত। পরে পিবিআই আসামিরা জড়িত নয় বলে পুনরায় প্রতিবেদন দেন। মামলার নিয়মিত চলমান প্রক্রিয়ায় ও প্রতিবেদন উপযুক্ত মনে না করায় ন্যায় বিচারের স্বার্থে চলতি বছরের ১ মে গোয়েন্দা পুলিশকে গৃহকর্মীর মৃত্যু কারণ, ডিএনএ টেস্ট করার জন্য নিহতের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করার নির্দেশ প্রদান করেন ঢাকার সিএমএম আদালত। আদালতের নির্দেশে আজ কবর থেকে গৃহকর্মীর মরদেহ উত্তোলন করা হলো।

জেইউ

আর্কাইভ