• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ০৯ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

একই পরিবারের পাঁচজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে তাদের

প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২৩, ০৪:৪৭ পিএম

একই পরিবারের পাঁচজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে তাদের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে একই পরিবারের ৭ সদস্যের মধ্যে পাঁচজনই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। পরিবারটির উপার্জনের কোনো পথ না থাকায় অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে তাদের। প্রতিবন্ধী ভাতা, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় কোন রকমে চলছে তাদের অভাবের সংসার।

কুড়িগ্রাম সদরের হলোখানা ইউনিয়নের চর সুভারকুটি গ্রামের মোক্তারের হাট এলাকায় পরিবারসহ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শহিদার রহমানের (৬৫) বসবাস। তিনি জন্মগতভাবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। তার স্ত্রী আছমা বেগমও বিয়ের পরেই টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টি হারান। তাদের ৫ সন্তানের মধ্যে শফিকা খাতুন (১৮), শরিফা খাতুন (১৬) ও মাছুম বিল্লাহ (২০) জন্মগত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। তার ৩ ছেলে-মেয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায় শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন না। শহিদার রহমান স্থানীয় একটি মসজিদে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করলেও অসুস্থতাজনতি কারণে সে চাকরিটিও হারিয়েছেন। 

স্থানীয় বাসিন্দা সাহেরা বেগম বলেন, শহিদারের পরিবারটিতে খুবই অভাব। অনিশ্চয়তায় দিন পার করছেন তারা। কেন না একমাত্র ছেলে মাছুম বিল্লাহও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায় সেও কোনো কর্ম করতে পারছে না। বিভিন্ন মানুষের সহযোগিতায় তাদের সংসার চলছে।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শহিদার রহমান বলেন, আমার পরিবারের কী অবস্থা সবাই জানে। আগে একটি মসজিদের মোয়াজ্জেন ছিলাম। এখন অসুস্থতার কারণে তাও করতে পারছি না। প্রতিবন্ধী ভাতা ও মানুষের সাহায্য সহোযোগিতায় কোনো রকমে চলছি। আমার পরিবারকে সরকারের পাশাপাশি কেউ যদি একটা স্থানীয় আয়ের ব্যবস্থা করে দিত তাহলে মনে হয় একটু ভালো মতো চলতে পারতাম। না হলে তো এইভাবে কষ্ট করতে করতে জীবনটা শেষ হয়ে যাবে।

dhakapost

শহিদারের মেয়ে সাঈয়েদা সিদ্দিকা বলেন, আমি উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছি। পরিবারে অভাবে থাকার কারণে ঠিকমতো পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারছি না। তারপরেও কষ্ট করে পড়াশোনা করছি।

সদরের হলোখানা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রেজা বলেন, শহিদারের পরিবারে পাঁচজনই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী ভাতা পরিবারটির একমাত্র আয়ের উৎস। কিছুদিন আগে ইউএনও স্যার সরেজমিন পরিদর্শন করে গেছেন। সেই সঙ্গে তাদেরকে একটি গরু প্রদান করেছেন। আমরাও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, শহিদার রহমানের পরিবারে স্বামী-স্ত্রী ছেলে মেয়েসহ ৫ জনই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় আমরা ৫ জনকেই সুবর্ণ কার্ড করে দিয়েছি। সরকারের দেওয়া প্রতিবন্ধী ভাতায় পরিবারটির সংসার চলছে। তারপরেও আমরা আমাদের বিভাগ থেকে সবসময়ই সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি তাদের জন্য।

 

 

বিএস/

আর্কাইভ