
প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৫, ০৯:৩০ পিএম
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের মধ্যে চলমান আইনি বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির কন্যা ক্লিও কার্নি ও বেলজিয়ামের রাজকন্যা এলিজাবেথও।
সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নিয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় গত ২৩ মে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে। মামলায় প্রশাসনের ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, এ সিদ্ধান্ত মার্কিন সংবিধানের প্রথম সংশোধনী লঙ্ঘন করে এবং এতে তাদের ৭,০০০ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ওপর ‘তাৎক্ষণিক ও ধ্বংসাত্মক প্রভাব’ পড়বে।
এরপর এক মার্কিন বিচারক অস্থায়ীভাবে সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত করে ‘নিষেধাজ্ঞা আদেশ’ জারি করেছেন, যাতে শিক্ষার্থীদের ওপর তৎক্ষণাৎ প্রভাব না পড়ে।
তবে যদি ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে, তাহলে হার্ভার্ড আগামী দুই বছর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না। আর যারা বর্তমানে ভর্তি আছেন ভিসা টিকিয়ে রাখতে তাদেরকে অন্য মার্কিন কলেজে স্থানান্তর করতে হতে পারে।
বিতর্কের পেছনে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির অনুরোধ
এই বিরোধের সূচনা হয় গত ১৬ এপ্রিল। ওই সময় হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোম হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষকে কিছু শিক্ষার্থীর তথ্য দিতে বলেন। যার মাধ্যমে তাদের বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার জন্য দায়ী করে ভবিষ্যতে বহিষ্কার করা যেতে পারে।
২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, হার্ভার্ডে ৬৮৬ জন কানাডিয়ান শিক্ষার্থী ছিলেন। এদের মধ্যে রয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনির কন্যা ক্লিও কার্নিও। তিনি হার্ভার্ডে সবে তার প্রথম বর্ষ শেষ করেছেন। ক্লিও ‘রিসোর্স এফিসিয়েন্সি প্রোগ্রাম’-এর অধীনে পড়াশোনা করছেন।
আরেক আলোচিত শিক্ষার্থী হলেন বেলজিয়ামের রাজকন্যা এলিজাবেথ। যিনি কিনা বেলজিয়ামের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী। তিনি হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলে পাবলিক পলিসি বিষয়ে দুই বছরের মাস্টার্স প্রোগ্রামের প্রথম বর্ষ শেষ করেছেন। বর্তমানে তিনি বেলজিয়ামে অবস্থান করছেন এবং দ্বিতীয় বর্ষে ফিরতে পারবেন কিনা—তা স্পষ্ট নয়।
এ বিষয়ে বেলজিয়াম রাজপ্রাসাদের মুখপাত্র জ্যাভিয়ের বার্ট বলেন, ‘এ সিদ্ধান্ত রাজকুমারীর ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলবে তা এখনই বলা কঠিন। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি’।
হার্ভার্ডের কড়া নিন্দা
এদিকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ট্রাম্প প্রসাশনের সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে বলেছে,
‘সরকার একটি কলমের আঁচড়ে আমাদের শিক্ষার্থীসংখ্যার এক-চতুর্থাংশকে মুছে দিতে চেয়েছে। অথচ এই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও এর মিশনে অপরিহার্য অবদান রাখছে’।
বিশ্ববিদ্যালয়টি আরও জানিয়েছে, তারা দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে, যাতে তাদের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা ও দিকনির্দেশনা দেওয়া যায়। সূত্র: এনডিটিভি