
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ০২:০৫ পিএম
ভারতে সদ্য অনুষ্ঠিত উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট কেনাবেচার অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার দাবি, প্রতিটি ভোটের জন্য খরচ হয়েছে ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা।
অভিষেক বলেন, ‘টাকার বস্তা নিয়ে ভোট কেনা হয়েছে। সাংসদদের কেনা যায়, কিন্তু সাধারণ মানুষকে কেনা যায় না।’
তার এই বক্তব্য ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। বিরোধী মহলের অনেক নেতা সরাসরি মুখ না খুললেও, ভেতরে ভেতরে প্রশ্ন তুলেছেন—এত বড় অঙ্ক কোথা থেকে এল, কারা দিল, আর কোন প্রক্রিয়ায় তা ঘটল।
ভারতের সংসদীয় রাজনীতিতে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোট দেন শুধু সংসদ সদস্যরা। সাধারণ মানুষের সেখানে সরাসরি ভূমিকা নেই। তাই ভোটাররা অর্থাৎ সাংসদরা যদি টাকার বিনিময়ে সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে গণতন্ত্রের মানে কোথায় দাঁড়ায়? এ প্রশ্ন এখন অনেকেই তুলছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনে টাকার প্রভাব নতুন নয়। কিন্তু এই অঙ্ক যদি সত্যিই ব্যয় হয়ে থাকে, তাহলে এটি শুধু নির্বাচন নয়, রাষ্ট্রযন্ত্রের বিশ্বাসযোগ্যতার ওপরও বড় আঘাত। কারণ, কোটি কোটি টাকার খেলা মানে রাজনীতির সঙ্গে ব্যবসা ও পুঁজির আঁতাত আরও গভীর হচ্ছে।
বিরোধীদের একাংশ মনে করছেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য শুধু আবেগের বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং তথ্যভিত্তিক ইঙ্গিতও থাকতে পারে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন শিবির অবশ্য এ অভিযোগ নিয়ে কোনো মন্তব্য করছে না। নীরবতা বজায় রাখা হয়েছে।
অর্থনীতির সঙ্গে রাজনীতির এই মেলবন্ধন সাধারণ মানুষের আস্থা আরও দুর্বল করছে। জনগণ দেখতে পাচ্ছে, তাদের প্রতিনিধি ভোট দেওয়ার সময় নীতির চেয়ে টাকাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। এতে ভবিষ্যতে গণতন্ত্র নিয়ে মানুষের বিশ্বাস ভেঙে পড়তে পারে।
রাজনীতিতে নীতি নয়, পয়সা—এমন ধারণা যদি ক্রমে প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ধরে রাখা কঠিন হবে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ তাই শুধু রাজনৈতিক বক্তব্য নয়, এক ভয়াবহ সংকেতও।