
প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২৫, ০১:২০ পিএম
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, পরিবেশ মানবাধিকার রক্ষাকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের নিরাপত্তাকে আইনগত কাঠামোর মধ্যে আনতে হবে।
শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে “জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ (খসড়া)” বিষয়ক জাতীয় পরামর্শ সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে পরিবেশ মানবাধিকার রক্ষাকারীরা হত্যা ও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন, যা জাতিসংঘও বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। বাংলাদেশের জাতীয় আইনেও এ বিষয়টির প্রতিফলন থাকা জরুরি।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, মানবাধিকার রক্ষায় বিচার বিভাগের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আদালত অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দিয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়নে সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে। বর্তমান খসড়া অধ্যাদেশটি সামগ্রিকভাবে ভালো; এতে তদন্ত, সুপারিশ, ক্ষতিপূরণ, প্রশিক্ষণ, পরামর্শ, সালিশ ও মধ্যস্থতা—সব উপাদান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এখন সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো কমিশনকে কীভাবে কার্যকর ও সক্ষম করা যায়।
তিনি আরও বলেন, কমিশনের সুপারিশকে কেবল নৈতিক শক্তি নয়, আইনি প্রভাবসম্পন্ন করতে হবে। সালিশ বা মধ্যস্থতার মাধ্যমে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্যও আইনগত কাঠামো থাকা জরুরি। ‘ব্যক্তি’ শব্দের সংজ্ঞায় সরকারি সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা, কমিশনের নিজস্ব আইনজীবী প্যানেল গঠন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় রাখার প্রস্তাব দেন তিনি।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, প্রস্তাবিত এই আইনটি পুলিশ কমিশন, নারী কমিশন, গুম ও নিখোঁজ তদন্ত কমিশন এবং গণমাধ্যম কমিশনের মতো অন্যান্য আইনের সঙ্গে পরিপূরক হবে। তাই এসব আইনের পারস্পরিক সম্পর্ক ও সামঞ্জস্য নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল; গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান; সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো সিগফ্রিড রেনগলি; ডেনমার্ক দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন আন্ডার্স বি. কার্লসেন; ইউএনডিপি বাংলাদেশের স্টেফান লিলার; আইন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী এবং ইউএনডিপির রোমানা শভাইগার।
সভায় আইন মন্ত্রণালয়, উন্নয়ন সংস্থা, মানবাধিকার কর্মী ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।