
প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৫, ০৫:৪২ পিএম
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী রোজার আগে অর্থাৎ ছাব্বিশের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সে অনুযায়ী, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) চিঠিও দেওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে।
সবমিলিয়ে দেশে যখন নির্বাচনি হাওয়া বইতে শুরু করেছে, ঠিক তখন অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘সংস্কার ব্যতীত নির্বাচন হলে- তা বিতর্কিত হতে পারে।’
শনিবার রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে অনুষ্ঠিত ছায়া সংসদে তিনি আরও বলেন, ‘লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি গ্রহণযোগ্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে।’
তবে বদিউল আলম মজুমদার এও বলেছেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। ফেব্রুয়ারিতে ঘোষিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া জরুরি।’
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। এজন্য রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, ভোটার, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সবার দায়িত্বশীল ভূমিকা অপরিহার্য।
এবারের নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। তবে রাজনৈতিক দলসমূহ যদি হুণ্ডা-গুণ্ডা ও টাকার খেলায় মত্ত থাকে, তাহলে ভালো নির্বাচন সম্ভব নয় বলেও সতর্ক করেন বদিউল আলম মজুমদার।
আসনভিত্তিক ও আনুপাতিক— উভয় পদ্ধতির সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান আলোচনায় নিম্নকক্ষ আসনভিত্তিক আর উচ্চকক্ষ আনুপাতিক পদ্ধতিতে গঠনের বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘নির্বাচনের প্রধান স্টেকহোল্ডার রাজনৈতিক দলগুলো এখনো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। জুলাই সনদ চূড়ান্ত না হওয়া এবং সনাতন নাকি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে- তা নিয়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধ নতুন শঙ্কা তৈরি করেছে।’ ঘোষিত সময়ে নির্বাচন না হলে দেশ ভয়াবহ সংকটে পড়তে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
ছায়া সংসদের প্রতিযোগিতায় ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাই প্রধান’ শীর্ষক বিতর্কে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজকে পরাজিত করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন- অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এসএম মোর্শেদ, সাংবাদিক সাইদুর রহমান, সাংবাদিক জাকির হোসেন লিটন এবং সাংবাদিক মো. হুমায়ূন কবীর। শেষে অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।