• ঢাকা শুক্রবার
    ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

উজবেকিস্তানকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর

প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২৩, ০৩:১২ এএম

উজবেকিস্তানকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশের ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগের জন্য উজবেকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। পাশাপাশি উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানো এবং পর্যটন খাত সম্প্রসারণে পুনরায় সরাসরি ফ্লাইট পরিবেষা চালুর আহ্বানও জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) বিকেল মন্ত্রণালয়ে উজবেকিস্তানের উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী বাখরম এ্যালোয়েভের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাতকালে এ আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, উভয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পর্যটন খাতের বিকাশের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্ক নির্মাণ করেছেন এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য আকর্ষণীয় প্রণোদনা প্যাকেজ এবং সুবিধা ঘোষণা দিয়েছেন।

তাই এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে উজবেক বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
 
সাক্ষাতকালে উজবেকিস্তানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তিনি বলেন, বাংলাদেশ-উজবেকিস্তান সরাসরি ফ্লাইট চালু এবং ভিসা সহজীকরণ হলে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা সফর করে বিনিয়োগের ক্ষেত্র বের করতে পারবেন। সরকার টু সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ী টু ব্যবসায়ী যোগাযোগ বাড়াতে হবে।

এছাড়া তিনি দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সামগ্রিক সুবিধার জন্য সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলোকে খুঁজে বের করে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

এসময় উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী বাখরম এ্যালোয়েভ সরাসরি ফ্লাইট চালুর ব্যাপারে তার সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিবে বলে জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, আগামী আগস্ট মাসে উজবেকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য ‘ইন্টার গভার্নমেন্টাল কমিশন’ এ বাংলাদেশ যোগদান করবে।
 
দুই দেশের মধ্যে পণ্য ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারিখাতের অংশগ্রহণ বাড়াতে এ সফরে বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে উজবেকিস্তান সফরের মাধ্যমে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভিত্তি রচনা করেন। তারপর থেকেই বাংলাদেশ-উজবেকিস্তান অত্যন্ত দৃঢ় ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। যা কালের পরিক্রমায় নতুন মাত্রা পেয়েছে।

২০১৯ ও ২০২২ সালে বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে তার তাসখান্দ সফরে আতিথেয়তার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বিশ্বের মাত্র দুটি দ্বি-ভূমিবেষ্টিত দেশের মধ্যে উজবেকিস্তান একটি। দেশটি প্রাচীন সিল্ক রুটের ওপর অবস্থিত। ফলে এটি বাণিজ্য, অর্থনীতি, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি এবং শিল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
 
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া এবং প্রধান উন্নত দেশসহ ১৫২টিরও বেশি দেশে বাংলাদেশ ‍ওষুধ রফতানি করছে উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য এবং জেনেরিক ওষুধ আমদানি ছাড়াও তৈরি পোশাক, পাট, পাটজাত পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, সিরামিক পণ্য, আইসিটি পণ্য, হস্তশিল্প, চামড়া কৃষি, টাটকা ফল, শাকসবজি ও কৃষি-যন্ত্র দক্ষতা উন্নয়ন এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার বিশাল সুযোগ রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।


সাক্ষতকালে উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী তাদের দেশে বাংলাদেশি পণ্য প্রদর্শন করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সব সূচকে সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য বিশ্বে সুনাম ধরে রেখেছে।

কাজেই বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের উজবেকিস্তানে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও বন্ধুত্বপূর্ণ এবং দৃঢ় অবস্থানে নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ২৬ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানির বিপরীতে উজবেকিস্তান থেকে ৮ দশমিক ৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে।


এডিএস/

অর্থ ও বাণিজ্য সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ