• ঢাকা রবিবার
    ১৯ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

চার মাসে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৬ লাখ ৭৭ জন: স্বাস্থ্য অধিদফতর

প্রকাশিত: মে ২২, ২০২২, ০৪:৩৬ পিএম

চার মাসে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৬ লাখ ৭৭ জন: স্বাস্থ্য অধিদফতর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সারা দেশে গত চার মাসে ৬ লাখ ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময় মারা গেছেন আটজন। শনিবার (২১ মে) স্বাস্থ্য অধিদফতর এ তথ্য জানিয়েছে।

তবে এখন আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র-আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর চাপ কিছুটা কম। আইসিডিডিআর,বি সূত্র জানিয়েছে, এখন দৈনিক গড়ে ৫০০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। মার্চের শেষে ও এপ্রিলের প্রথম দিকে দৈনিক এক হাজারের বেশি রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হতে দেখা গেছে।

এর মধ্যে ময়মনসিংহ জেলায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে। এই জেলায় মারা গেছেন তিনজন। কক্সবাজার জেলায় মারা গেছে দুজন।

অবশ্য বরিশাল বিভাগে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মার্চে বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫ হাজার ৪১৫ জন। এপ্রিলে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১১ হাজার ৩৭৭ জনে। আর মে মাসের প্রথম ২০ দিনে ৭ হাজার ৬৯০ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালকের কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, সারা দেশে মার্চের চেয়ে এপ্রিলে ডায়রিয়ায় বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মার্চে ৬৪ জেলায় মোট আক্রান্ত ছিলেন ১ লাখ ৭০ হাজার ২৩৭ জন। এপ্রিলে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ১৫ হাজার ৩৩৩-এ। গত ৪ মাসে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৯৪৪ জন।

ঢাকা জেলার পর সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন ঝিনাইদহ জেলায়। ৪ মাসে ঢাকা জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ হাজার ৩৪৩ জন। তবে এই হিসাবের মধ্যে আইসিডিডিআর,বির হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া রোগীর তথ্য নেই। এই হাসপাতালে ঢাকা ছাড়াও গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ জেলার মানুষ চিকিৎসা নেন। হাসপাতালটিতে এই সময়ে ৮৮ হাজার ৫৯৩ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। আর ঝিনাইদহ জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ হাজার ৩৩০ জন। সবচেয়ে কম আক্রান্ত হতে দেখা গেছে লালমনিরহাট জেলায়। উত্তরের এই জেলায় ৪ মাসে ১ হাজার ৫৮১ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, এই হিসাব হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাসপাতালে ভর্তির হওয়া রোগীর চেয়ে অনেক বেশি মানুষ প্রতিবছর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। অনেকে চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসা নেন। অনেকে খাওয়ার স্যালাইন কিনে বা তৈরি করে পরিস্থিতি সামাল দেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশে ডায়রিয়াজনিত রোগে মানুষের মৃত্যু কমেছে। এর প্রধান কারণ, মানুষের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতা বেড়েছে। পরিস্থিতি খারাপ হলে মানুষ নিজ উদ্যোগে চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালে যায়।

এরপরও সরকারি হিসাবে গত ৪ মাসে ৮ জনের এই পানিবাহিত রোগে মৃত্যু হয়েছে।

এর মধ্যে ময়মনসিংহ জেলায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে। এ জেলায় মারা গেছেন তিনজন। কক্সবাজার জেলায় মারা গেছেন দুজন।

লক্ষ্মীপুর, বান্দরবান ও সুনামগঞ্জ জেলায় একজন করে মারা গেছেন। এ বছর মার্চের শুরুর দিকে আইসিডিডিআর,বির হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীদের ভর্তি বাড়তে থাকলে ঢাকা শহরের পানির মান নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন দেখা দেয়। আইসিডিডিআর,বি অবশ্য ঢাকা ওয়াসাকে পানিতে ক্লোরিনের পরিমাণ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছিল। তবে ওয়াসা বারবার দাবি করে এসেছে, তাদের পানির মান ভালো। অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা গত মাসে বলেছিল, ঢাকার কিছু এলাকায় কলেরার টিকা দেওয়া হবে। অধিদফতরের একটি সূত্র জানিয়েছে, শিগগির সেই টিকা দেওয়া হবে।

এফএ/এএল
আর্কাইভ