প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২১, ০২:৫৫ পিএম
                 
                            
              আজ শুক্রবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে এ বছর শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা হবে।
অনন্য এ সম্মাননা দৌড়ে কারা এগিয়ে,
তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার
শেষ নেই। শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে সম্ভাব্য বিজয়ীদের তালিকায় যারা আছেন তাদের
বিষয়ে একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।
কোভ্যাক্স
করোনাভাইরাস মহামারি থেকে বাঁচতে ধনী দেশগুলো যখন অর্থ আর আধিপত্যের জোরে
বেশিরভাগ টিকা বাগিয়ে নিয়েছে, তখন দরিদ্রদের টিকাপ্রাপ্তির আশা-ভরসার
কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে কোভ্যাক্স কর্মসূচি। গ্যাভি দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স, কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিয়ার্ডনেস ইনোভেশনস ও জাতিসংঘের যৌথ এ উদ্যোগ
প্রশংসিত হচ্ছে সারা বিশ্বে। ২০২১ সাল শেষ হওয়ার আগেই দরিদ্র দেশগুলোতে ২০০ কোটি
ডোজ টিকা বিতরণের লক্ষ্য নিয়েছিল কোভ্যাক্স। যদিও সেই লক্ষ্যমাত্রা থেকে তারা অনেক
অনেক দূরে, তবে যতটা করেছে সেটাও কম নয়। ফলে এ বছর
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার দৌড়ে প্রথমেই উঠে আসছে কোভ্যাক্সের নাম।
ইলহাম তোহতি
উইঘুর পণ্ডিত ইলহাম তোহতিকে ২০১৪ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে চীন। তার
বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে। জিনজিয়াংয়ের আদিবাসীদের প্রতি চীন
সরকারের নীতির অন্যতম সমালোচক ও উইঘুরদের অধিকার আদায়ের অন্যতম সোচ্চার কণ্ঠ বলা
হয় ইলহামকে।
২০১৪ সালে পিইএন/বারবারা গোল্ডস্মিথ ফ্রিডম টু রাইট অ্যাওয়ার্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাখারভ পুরস্কার এবং ২০১৯ সালে ভ্যাক্লাভ হ্যাভেল
মানবাধিকার পুরস্কার জেতা এ পণ্ডিত এ বছর শান্তিতে নোবেলের অন্যতম দাবিদার।
ইসরায়েলের বি’সেলেম ও ফিলিস্তিনি মানবাধিকার কেন্দ্র
এ দুটি সংস্থা অবরুদ্ধ পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য
সংগ্রহে কয়েক দশক ধরে কাজ করছে। দীর্ঘমেয়াদি এ সহিংসতার শান্তিপূর্ণ সমাধানের
পক্ষে প্রচারণাও চালায় তারা। এ বছর শান্তিতে নোবেল বিজয়ীদের সম্ভাব্য তালিকায়
তাদের নাম উঠে এসেছে।
অ্যালেক্সেই নাভালনি
রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা ও প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অন্যতম সমালোচক
নাভালনি গত বছর মরতে মরতে বেঁচে গেছেন। আততায়ীরা শক্তিশালী বিষ প্রয়োগে হত্যা করতে
চেয়েছিল তাকে। সেই বিপদ কাটিয়ে উঠলেও স্বস্তিতে থাকা হয়নি নাভালনির। একটি মামলায়
প্যারোল ভঙ্গ করার অপরাধে কারাগারে ঢোকানো হয়েছে তাকে। তবে এর পেছনে রুশ সরকারের
প্রতিহিংসা ও রাজনৈতিক কারণই মূল প্রভাবক বলে মনে করা হচ্ছে।
সভেৎলানা টিখানোভস্কায়া
বেলারুশের বিরোধী নেতা সভেৎলানা টিখানোভস্কায়াকে বলা হয় স্বৈরশাসক আলেক্সান্দার
লুকাশেঙ্কোর সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক। নিজে কখনও প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে না চাইলেও
বেলারুশের রাজনীতিতে বেশ প্রভাব রয়েছে তার। সাম্প্রতিক নির্বাচনে টিখানোভস্কায়ার
দলকে বিপুল ভোটে হারিয়েছেন লুকাশেঙ্কো, তবে সেই ভোটের
গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বিভিন্ন মহলে।
নাথান ল
হংকংয়ের গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকর্মী নাথান ল ২০১৪ সালে আলোচিত আমব্রেলা
মুভমেন্টের অন্যতম আয়োজক ছিলেন। চীনা শাসনের হাত থেকে হংকংকে মুক্ত করার লক্ষ্যে
২০১৯ সালে ডেমোসিস্টো পার্টি গঠন করেন তিনি। এরপর নির্বাচনেও জিতেছিলেন নাথান, তবে পরে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করে চীন নিয়ন্ত্রিত শাসক গোষ্ঠী।
২০২০ সালে টাইম ম্যাগ্যাজিনের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় থাকা হংকংয়ের এ নেতা
এবার শান্তিতে নোবেলের দৌড়েও এগিয়ে রয়েছেন।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) ও কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস
(সিপিজে)
গত কয়েক বছর সাংবাদিক ও সবাদমাধ্যমের জন্য বেশ কঠিন গেছে। স্বস্তি নেই এখনও।
বেশ কয়েকজন প্রসিদ্ধ সংবাদকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এ ধরনের ঝুঁকিতে থাকা
সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক দুই
সংস্থা আরএসএফ ও সিপিজে এ বছর শান্তিতে নোবেল পাওয়ার অন্যতম দাবিদার।
গ্রেটা থানবার্গ
গত কয়েক বছর ধরেই শান্তিতে সম্ভাব্য নোবেল বিজয়ীদের তালিকায় নাম আসছে জলবায়ু
আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থানবার্গের। সুইডিশ এ কিশোরী জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি
মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের গৃহীত অপর্যাপ্ত পদক্ষেপের কঠোর সমালোচক। তিনি এ বছর
শান্তিতে নোবেল জিততে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শামীম/ডাকুয়া