• ঢাকা শুক্রবার
    ১০ মে, ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশি ঋণের সুদে ৩০ শতাংশ করারোপে ব্যবসায়ীদের আপত্তি

প্রকাশিত: জুলাই ২৫, ২০২৩, ০৫:৫০ পিএম

বিদেশি ঋণের সুদে ৩০ শতাংশ করারোপে ব্যবসায়ীদের আপত্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশি ঋণের সুদের ওপর অনধিক ৩০ শতাংশ করারোপ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। নতুন আয়কর আইনে এ করারোপের কারণে বৈদেশিক ঋণ ব্যয়বহুল হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। 

বিদেশি ঋণের সুদের ওপর আয়কর আরোপের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে এরই মধ্যে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)। 

তারা বলছেন, বিদেশি ঋণদাতারা এখন তাদের সুদের ওপর ধার্য করের অংশটি ঋণগ্রহীতাদের ওপরই চাপিয়ে দেবে। তখন এ অতিরিক্ত কর ব্যবসার জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।

এমসিসিআইয়ের সেক্রেটারি জেনারেল ফারুক আহাম্মাদ সই করা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের সব ব্যবসা মূলত আমদানিনির্ভর। এছাড়া সব শিল্প প্রতিষ্ঠানের মেশিনারিজ ও শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল বৈদেশিক ঋণের মাধ্যমেই আমদানি করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির কারণে সময়মতো এলসি খোলা ও আমদানি করতে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো ব্যর্থ হচ্ছে।

১৬ জুলাই এনবিআরকে দেওয়া চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, নতুন শিল্প প্রকল্প ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে শিল্পমালিকদের বৈদেশিক ঋণের ব্যবস্থা করার সুযোগ রয়েছে। বৈদেশিক ঋণ ব্যবস্থার মাধ্যমে এরই মধ্যে দেশীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগও রয়েছে। তবে বিদেশি ঋণের সুদের ওপর আগে কর নেওয়ার বিধান ছিল না।

১৯৭৬ সালের একটি স্ট্যাটিউটরি রেগুলেটরি অর্ডারের (এসআরও) মাধ্যমে তা অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত ২৩ মে আয়করের নতুন এসআরও জারির মাধ্যমে সেই এসআরও বাতিল করা হয়েছে। নতুন এসআরও জারি করায় আয়কর আইন-২০২৩ অনুযায়ী উৎসে কর কর্তনযোগ্য হয়ে পড়ে বিদেশি ঋণের সুদ।

এমসিসিআইয়ের দাবি, বৈদেশিক ঋণের সুদের ওপর ধার্য এ কর দেশীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। অতিরিক্ত ২০ শতাংশ হারে উৎসে কর কেটে নিলে ব্যবসার ব্যয় বাড়বে। অধিক পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশের বাইরে চলে যাবে বলেও মনে করে সংগঠনটি। এছাড়া দেশীয় ঋণের সুদ করমুক্ত। এ বৈষম্যের কারণে বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্তও হতে পারে। তাই এসব বিষয় বিবেচনা করে বিদেশি ঋণের সুদের ওপর কর কর্তনের বিধানটি বাতিলের দাবি জানিয়েছে এমসিসিআই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের মোট বৈদেশিক ঋণ ছিল ৯৬ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার। বেসরকারি খাতের ঋণ ছিল ২৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে আবার স্বল্পমেয়াদি বাণিজ্যিক ঋণ ছিল ১১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

এর আগে বিদেশি ঋণে সুদ ব্যয়ের সীমা নির্ধারণের বিধান বাতিলের দাবি জানিয়ে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই)। 

নতুন আয়কর আইনের ৫৩ ধারা অনুযায়ী, কোনো করবর্ষে সুদ ব্যয়ের বিষয়ে এনবিআরের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। তবে কোনো আয়বর্ষে পরিশোধিত সুদের পরিমাণ ১৫ লাখ টাকার বেশি না হলে এ ধারা প্রযোজ্য হবে না।

 

বিএস/

অর্থ ও বাণিজ্য সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ