• ঢাকা সোমবার
    ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

মাগুরায় ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত সাফ জয়ী সাথী-ইতি, ছিল না জেলা ক্রীড়া সংস্থার উপস্থিতি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২, ০৫:৩৬ এএম

মাগুরায় ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত সাফ জয়ী সাথী-ইতি, ছিল না জেলা ক্রীড়া সংস্থার উপস্থিতি

মাগুরা প্রতিনিধি

সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়শিপে নতুন ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। নেপালকে ৩-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরেছে। বাংলাদেশকে সম্মানিত করেছে বিশ্ব দরবারে। এই ইতিহাসগড়া বাঘিনী দলের অন্যতম দুই নক্ষত্র ছিল মাগুরার সাথী বিশ্বাস ও ইতি রানী মন্ডল। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সাফ জয়ী এই দুইজন নিজ গ্রামে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেলেন ফুলেল শুভেচ্ছা। তবে তাদের মাগুরায় আগমনের দিনে দেখা যায়নি জেলা ক্রীড়া সংস্থা বা প্রশাসনের কাউকে। 

মেয়েদের আগমনের বিষয়টি জানেন না বলে দাবি করেছেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হাজী মকবুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকাতে আছি। তারা যে আজ মাগুরাতে যাবেন এটা আমার জানা ছিল না। তাদের আগমনে জেলা ক্রীড়া সংস্থার যাওয়া উচিত ছিল বলে আমি মনে করি। তবে আমি মাগুরাতে থাকলে অবশ্যই যেতাম। আমরা তাদের জন্য পরবর্তীতে সংবর্ধনার ব্যবস্থা করব।’

জেলা ক্রীড়া সংস্থা বা প্রশাসনের কেউ সেখানে উপস্থিত না থাকলেও মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন তারা। এদিন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) গাড়ি এলাকার বাজারে পৌঁছানো মাত্রই রাস্তার দুই পাশে থাকা স্থানীয় জনগণ তাদেরকে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। সেখানে আগে থেকে উপস্থিত ছিলেন গোয়ালদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষিকা আরিফা সুলতানার নেতৃত্বে একটি দল। তখন ওই শিক্ষিকা মাগুরার এই দুই নারী ফুটবলারকে ফুলের মালা পরিয়ে দেন। পরে সেখান থেকে তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় গোয়ালদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে। 

সাফ নারী চ্যাম্পিয়ন দলে থাকা মাগুরার দুই নারী ফুটবলার সাথী বিশ্বাস ও ইতি রানী মণ্ডলকে ইতিমধ্যে ১ লক্ষ টাকা করে পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মাগুরার জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম। এছাড়া জেলা পর্যায়ে তাদেরকে সংবর্ধনা দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সবুর বলেন, ‍‍`আমরা সারা জীবন পুরুষ ফুটবলারদের খেলা দেখে এসেছি। তাদের খেলায় সাধারণত মানুষ বেশি দেখে। তবে আজ নারী ফুটবলাররা যে এত বড় একটি অর্জন বয়ে এনেছে তার জন্য দেশবাসী অনেক খুশি। এই দলে থাকা দুই নারী ফুটবলার আমাদের এলাকার জন্য গৌরব বয়ে এনেছেন। তাদের জন্য শুভকামনা রইল।‍‍`

গ্রামবাসী এই ভালোবাসায় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মেয়েদের এই সাফল্যের জন্য স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষককে অভিনন্দন জানান সাথী ও ইতির পরিবার।

এদিনকে চাকরি জীবনের শ্রেষ্ঠ দিন উল্লেখ করেন গোয়ালদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও নারী ফুটবলারদের কোচ প্রভাস রঞ্জন দেবজ্যোতি ও সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম।

প্রভাস রঞ্জন দেবজ্যোতি বলেন, ‍‍`আমাদের শুরু মূলত বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট দিয়ে। এখন পর্যন্ত এই স্কুল থেকে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি এই বিদ্যালয় থেকে ১৪ জন মেয়ে বিকেএসপিতে সুযোগ পেয়েছে। তার মধ্যে ৮ জনসহ মোট ১০ জন মেয়ে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক জাতীয় দলে খেলছেন।‍‍`

গ্রামবাসীর এই ভালোবাসায় সিক্ত দুই নারী ফুটবলার সাথী বিশ্বাস ও ইতি রানী মণ্ডল বলেন, ‍‍`আমাদের আজকের এই পর্যন্ত পৌঁছানোর অবদান আমাদের স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রভাস রঞ্জন দেবজ্যোতি ও সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম স্যারের। গ্রামবাসী আমাদেরকে যে ভালোবাসা দিয়েছে এই ভালোবাসা নিয়ে আমরা আরো সামনে এগিয়ে যেতে চাই।‍‍`

 

এসএএস/এআরআই

আর্কাইভ